সবজিবীজে কৃষকের দিনবদল

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

এক বিশেষ পদ্ধতিতে সবজিবীজ উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন নীলফামারী জেলা সদরের খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের শাহ্পাড়া গ্রামের কৃষকেরা। অনেকে খড়ের ঘরের বদলে টিনের ঘরের মালিক হয়েছেন, জমি কিনেছেন, সংসারে এনেছেন সচ্ছলতা।

সম্প্রতি জেলা সদর থেকে পশ্চিমে নীলসাগর যাওয়ার পথে রাস্তার দুই ধারে ওই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মশারির জাল দিয়ে খেত ঘিরে রেখে বিভিন্ন ধরনের সবজি আবাদ করেছেন কৃষকেরা। আবার মাচা দিয়ে চাষ করা হয়েছে করলা, চাষ করা হয়েছে মরিচ ও মিষ্টিকুমরা। এভাবে বীজ চাষ করার নাম দেওয়া হয়েছে নেট হাউস পদ্ধতি।

দেখা গেল, জালের ভেতর (নেট হাউস পদ্ধতিতে) চাষ করা হয়েছে বেগুন। আর জালের ভেতর বসে খেত পরিচর্যা করছেন কৃষকেরা।

এ সময় শাহ্পাড়া গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, এসব খেতের সবজি বাজারজাত করার জন্য ফলানো হচ্ছে না। এগুলো থেকে বীজ সংগ্রহ করে তা বেশি দামে বিক্রি করা হবে। একটি বীজ বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান এভাবে সবজিবীজ উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা দিচ্ছে। তারা কৃষকদের মধ্যে উচ্চফলনশীল সবজির বীজ বিতরণ করছে এবং কৃষকদের বীজ উৎপাদনে যাবতীয় পরামর্শ দিচ্ছে। গ্রামের ৫০ জন কৃষক এ পদ্ধতিতে সবজিবীজ উৎপাদন করে উপকৃত হয়েছেন।

গ্রামের মো. মোমিনুর রহমান (৩৫) বলেন, ‘আগে আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করে যে পারিশ্রমিক পেতাম, তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হতো না। তখন দেখতাম, গ্রামের নবাব আলী অল্প জমিতে বীজ উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছেন। ২০০৯ সালে আমি করলাবীজ চাষ শুরু করি। এরপর মিষ্টিকুমড়া। তাতে লাভ ভালোই হতে থাকে। গত বছর ৩৫ শতক জমিতে করলাবীজ চাষ করে ৪২ কেজি বীজ পাই। প্রতি কেজি করলাবীজ বিক্রি হয় ২ হাজার ২০০ টাকা দরে। ওই বীজ উৎপাদনে খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। ২০ শতক জমিতে মিষ্টিকুমড়া চাষে খরচ হয় পাঁচ হাজার টাকা। বীজ বিক্রি হয় ৩২ হাজার। এভাবে বীজ উৎপাদন করে আমার সংসারে সচ্ছলতা বাড়তে থাকে। আগে কুঁড়েঘরে থাকতাম, এখন টিনের ঘর হয়েছে। বড় মেয়ের বিয়েতে তিন লাখ টাকা খরচ করেছি, ৮০ হাজার টাকায় ৭ শতাংশ জমিও কিনেছি। এবারই প্রথম বেগুনবীজ উৎপাদনে চাষ শুরু করেছি।’