ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় মাথা ফাটালেন সার্ভেয়ার!

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মিজানুর রহমান। বাগাতিপাড়া, ১৪ মে। ছবি: মুক্তার হোসেন
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মিজানুর রহমান। বাগাতিপাড়া, ১৪ মে। ছবি: মুক্তার হোসেন

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা ভূমি অফিসে ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় এক সেবাগ্রহীতার মাথা ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় সার্ভেয়ারের কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

আহত সেবাগ্রহীতা মিজানুর রহমানকে (৪২) বাগাতিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি উপজেলার মালিগাছা গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্ত সার্ভেয়ারের নাম আবু সায়েম।

মিজানুর রহমানের অভিযোগ, ভূমি–সংক্রান্ত আদালতের একটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তাঁর পক্ষে দেওয়ার কথা বলে ১ হাজার টাকা ঘুষ নেন সার্ভেয়ার আবু সায়েম। কিন্তু এক মাস পেরোলেও তিনি প্রতিবেদন জমা দেননি। এ কারণে আজ মঙ্গলবার সকালে ভূমি অফিসে গিয়ে আবু সায়েমের কাছে ঘুষের টাকা ফেরত চান মিজানুর। কিন্তু সাদা কাগজে স্বাক্ষর দেওয়ার শর্তে টাকা ফেরত দিতে চাইলে দুজনের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা বাঁধে। একপর্যায়ে সার্ভেয়ার তাঁর নিজের কাঠের চেয়ার তুলে মিজানুরকে আঘাত করেন। এতে মাথায় আঘাত লেগে রক্ত ঝরতে থাকে। আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ওই অফিসের কর্মচারীরা কাছের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

আজ দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘আমি ওই অফিসের একজন সেবাগ্রহীতা। যথাসময়ে আমার একটি মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলে সার্ভেয়ার আবু সায়েম আমার কাছ থেকে এক মাস আগে ১ হাজার টাকা নেন। অথচ তিনি তা না করে টালবাহানা শুরু করেন। আমি এর প্রতিবাদ করাতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে চেয়ার দিয়ে আমার মাথা ফাটিয়ে দেন। সরকারি কর্মচারী হয়ে তিনি আমাকে তাঁর অফিসের মধ্যে মারতে পারেন না। আমি ওই সার্ভেয়ারের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। প্রশাসন এর বিচার না করলে আমি আদালতে মামলা করব।’

ওই অফিসের অফিস সহায়ক মোফাখারুল ইসলাম বলেন, ‘বিকট শব্দ ও চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে মিজানুরের মাথায় রক্ত ঝরতে দেখি। সে সময় আমিসহ কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

তবে মাথা ফাটানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সার্ভেয়ার আবু সায়েম। তিনি বলেন, ‘সকালে অফিসে এসে লোকটি (মিজানুর রহমান) ঝামেলা শুরু করে। একপর্যায়ে নিজেই টেবিলের গ্লাসের সঙ্গে মাথা লাগিয়ে রক্ত ঝরায়। আমি তাঁর মাথা ফাটাইনি।’

উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা প্রশিক্ষণে থাকায় ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মুল বানীন দ্যুতি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। একজন সরকারি কর্মচারী কখনোই এমনটি করতে পারেন না। বিষয়টি সরেজমিনে গিয়ে দেখব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’