নারী নির্যাতন রোধে ভৈরবের ইউএনওর উদ্যোগ

গণপরিবহনে যৌন হয়রানি রোধে সচেতনতামূলক স্টিকার সাঁটাচ্ছেন ভৈরবের ইউএনও। গতকাল ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো
গণপরিবহনে যৌন হয়রানি রোধে সচেতনতামূলক স্টিকার সাঁটাচ্ছেন ভৈরবের ইউএনও। গতকাল ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

গণপরিবহনে যৌন হয়রানি ও নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। পরিবহনশ্রমিক ও একশ্রেণির যাত্রীর কাছে নারীরা এই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বেশি। মানুষের মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে এমনটি ঘটছে। ফলে ইচ্ছা থাকলেও নারীরা প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছেন না।

এমন উপলব্ধি থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত সাদমীন ছাপালেন স্টিকার। সেই স্টিকারে লেখা ‘নারীকে সম্মান করুন, সুস্থ সুন্দর সমাজ গড়ুন’। স্টিকারে একটি মুঠোফোন নম্বর (০১৭৬৬-২৫৪৮৮২) দেওয়া আছে। তাতে বলা হয়েছে, চলার পথে নারী নির্যাতন ও যৌন হয়রানি রোধে কল করুন।

গতকাল মঙ্গলবার ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ভৈরব বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অন্তত অর্ধশত যানবাহনে ইউএনও নিজের হাতে স্টিকার সাঁটিয়ে দেন। তিনি বেশ কয়েকটি বাসে ওঠেন। যাত্রী ও পরিবহনশ্রমিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক বক্তব্য দেন। ইউএনওর এই উদ্যোগ উপস্থিত যাত্রীদের অনেকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানান।

প্রচারণায় ইউএনওকে সহযোগিতা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে উদ্যোগটি প্রয়োজনীয়। নানা কারণে গণপরিবহনে আরোহী হতে নারীরা আগের মতো স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। উদ্যোগটি নারীদের ভেঙে পড়া মনোবল ফিরিয়ে পেতে সাহায্য করবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ইউএনও বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ইশারা দিয়ে থামাচ্ছেন। তারপর ছুটে যান ওই যানবাহনে এবং সাঁটিয়ে দেন স্টিকার। এ কাজে চালকদের অনেকে সহযোগিতা করছেন। কেউ কেউ এড়িয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেন।

ইউএনও ইসরাত সাদমীন বলেন, সরকারি-বেসরকারি অনেক উদ্যোগের পরও নারীরা ঘরে-বাইরে নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। গণপরিবহনে নারীরা নানাভাবে সম্ভ্রম হারাচ্ছেন। নার্স শাহিনুর আক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যার বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসায় দৃশ্যমান হয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন অসংখ্য নারী নানাভাবে এভাবে গণপরিবহনে যৌন হয়রানির শিকার হলেও তা আড়ালে থেকে যাচ্ছে।

ইউএনও জানান, স্টিকার লাগানো ও বাসে উঠে কথা বলার বিষয়টি ভৈরব ও কিশোরগঞ্জের মধ্যে চলাচলকারী যানবাহনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছেন। ভৈরবে কোনো সমস্যা হলে প্রতিকার পেতে কেউ যদি ফোন করেন, তাহলে তিনি সরাসরি প্রতিকারে উদ্যোগী হবেন।