বাড়ির দেয়ালে ছবি এঁকে হত্যার হুমকি

>

এবার বান্দরবান জেলা শহরতলীর প্রুমংউ হেডম্যানপাড়ার বাসিন্দাদের এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে।

এবার বান্দরবান জেলা শহরতলীর প্রুমংউ হেডম্যানপাড়ার ১২ জন পাড়াবাসীকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি সন্ত্রাসী চক্রের বিরুদ্ধে। গত সোমবার সকালে একটি বাড়ির দেয়ালে হুমকির কথা লিখে যায় সন্ত্রাসী চক্র। এরপর থেকে ওই পাড়ার পুরুষ সদস্যরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

প্রুমংউ হেডম্যানপাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মগ পার্টি নামে পরিচিত একটি সন্ত্রাসী দল এই হুমকি দিয়েছে। এর আগে সদর উপজেলার ৭ মে রাজবিলা ইউনিয়নের তাইংখালীতে একজন ও ৯ মে কুহালং ইউনিয়নের বাকিছড়া রাবার বাগানে একজনকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ ছাড়া ৭ মে তাইংখালী থেকে অপহরণ করা হয় ফোলাধন তঞ্চঙ্গ্যা নামে এক ব্যক্তিকে। এখনো পর্যন্ত ফোলাধনের কোনো খোঁজ মেলেনি। অপহৃত এবং নিহত সবাই জেএসএসের নেতা-কর্মী ও সমর্থক। এসব অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও মগ পার্টির সদস্যরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সোমবার হুমকি পাওয়ার পর প্রুমংউ হেডম্যানপাড়ার বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগছেন। অনেকে ওই পাড়া ছেড়ে এখন জেলা শহরে অবস্থান করছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জঙ্গল থেকে মুখে কাপড় বাঁধা দুই ব্যক্তি প্রুমংউ হেডম্যানপাড়ার চাকমা পাড়া অংশে আসেন। তাঁরা লোকজনকে খোঁজাখুঁজি করছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিণ্ডচরণ (আহার সংগ্রহ) অনুষ্ঠান থাকায় পুরুষ সদস্যদের সবাই পাড়ার বাইরে অবস্থান করছিলেন। পাড়ায় ছিলেন কেবল কয়েকজন নারী ও শিশু। প্রুমংউ হেডম্যানপাড়াটি জেলা শহরের বালাঘাটা বাজারের পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে বালাঘাটা-জামছড়ি সড়কে। পাড়ার চাকমাদের অংশে ৬৮ পরিবারের বসবাস রয়েছে।

যে বাড়ির দেয়ালে হুমকির কথা লেখা হয়েছে ওই বাড়ির মালিক বলেছেন, তাঁরা বাড়ির মালিককের নাম উল্লেখ করে মোট ১২ জন পাড়াবাসীকে হুমকি দিয়েছেন। হুমকির চিহ্ন স্বরূপ সেখানে ফাঁসির দড়ির ছবিও আঁকা ছিল।

পাড়ার বাসিন্দারা বলেন, সন্ত্রাসীরা নিজেদের মগ পার্টির সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছেন। এরা সীমান্তের ওপারে সক্রিয় আরাকানা লিবারেশন পার্টির (এএলপি) দলছুট সদস্য। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু মারমা যুবক যোগ দিয়েছেন। সন্ত্রাসী এই দলটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কর্মী-সমর্থকদের বাছাই করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। বান্দরবান ও রাঙামাটির রাজস্থলীর প্রভাবশালী ব্যক্তি এদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ আছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হোসেন বলেন, প্রুমংউ হেডম্যানপাড়াবাসীদের হুমকি দেওয়ার ব্যাপারে তাঁদের জানানো হয়নি। খোঁজখবর নিয়ে সেখানে টহল বাড়ানো হবে।