ভৈরবে চার কারখানাকে সাড়ে ৮ লাখ টাকা জরিমানা

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী চলা র‌্যাবের অভিযানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই, চানাচুর ও মুড়ি উৎপাদনের চারটি কারখানা শনাক্ত করা হয়। এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত চার কারখানার মালিককে সাড়ে আট লাখ টাকা জরিমানা করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিসুজ্জামান। অভিযানে সহযোগিতা করেন ভৈরব পৌরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক নাসিমা বেগম। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সহকারী কমিশনার জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার আইন প্রয়োগ করে অর্থ দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

র‌্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্প সূত্র জানায়, ভৈরবে ব্যবহৃত বেশির ভাগ পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মেশানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। রোজায় ভেজালের মাত্রা বেড়ে যায়। সে কারণে রমজান মাসের শুরু থেকেই ভেজালবিরোধী অভিযান চলছে। গতকাল অভিযান চালানো হয় শহরের রানীবাজার ও কমলপুর পঞ্চবটি এলাকার রাজা সেমাই ফ্যাক্টরি, মুন্না সেমাই ফ্যাক্টরি, জোনাইদ সেমাই ফ্যাক্টরি ও অখিল চন্দ্রের মুড়ি কারখানায়।

কারখানাগুলোয় গিয়ে দেখা গেছে, রাজা সেমাই কারখানার উৎপাদিত সেমাই নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর স্থানে রেখে শুকানো হচ্ছে। রাজা সেমাই কারখানাকে জরিমানা করা হয় তিন লাখ টাকা। সেমাই কারখানাটির মালিক কামরুজ্জামান রাজা বলেন, ঈদে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সবকিছু মাথায় রাখা যায় না।

মুন্না সেমাই ও চানাচুর কারখানার পাশে রয়েছে একটি গোয়ালঘর। গোমূত্রে চারপাশ স্যাঁতসেঁতে। নোংরা মেঝেতে রেখেই চানাচুর ও সেমাই শুকানো হয়। কারখানাটিতে গিয়ে চার টন পোড়া তেল পাওয়া যায়। তেলের নিচ থেকে অন্তত ১০ কেজি গাদ উদ্ধার করা হয়। পরে ওই পোড়া তেল ফেলে দেওয়া হয়। গত বছর রমজান মাসে চলা অভিযানে একই অপরাধে কারখানাটিকে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। চলতি বছরও একই সমস্যা শনাক্ত হওয়ায় এবার জরিমানা করা হয় চার লাখ টাকা।

একই অপরাধে জোনায়েদ সেমাই কারখানা মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

অখিল চন্দ্র দাসের মুড়ি কারখানাটির পরিবেশও অস্বাস্থ্যকর। এই প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই এসব পণ্য বাজারজাত করে আসছিল কারখানাগুলো। এ ছাড়া চারটি কারখানায় অসংখ্য শিশু শ্রমিক কাজ করছে।

র‌্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের এডি চন্দন দেবনাথ বলেন, গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর চারটি কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।