রাসেলকে ক্ষতিপূরণ দিতে আবার সময় চাইল গ্রিন লাইন
বাসের চাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণের বাকি টাকা না দিয়ে আদালতের কাছে আবার সময় চাইলেন গ্রিন লাইনের মালিকপক্ষের আইনজীবী ওয়াজি উল্লাহ। গত ১০ এপ্রিল এক মাস সময় দিয়ে ক্ষতিপূরণের ৪৫ লাখ টাকা রাসেল সরকারকে দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। সেই হিসাবে আজ বুধবার টাকা পরিশোধের দিন ছিল। তবে টাকা না দিয়ে সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন জানায় গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পরবর্তী শুনানির জন্য আজ বেলা দুইটার পর সময় ধার্য করেন।
পরে শুনানিতে বিচারপতিদ্বয় বলেন, ‘আপনারা যে সময় আবেদন করলেন, আপনাদের তো এক মাস সময় দেওয়া হয়েছিল। টাকা না দিয়ে কেন সময় চাইলেন।’
পরে শুনানি শেষে আগামী ২২ মে পর্যন্ত বাকি টাকা পরিশোধের সময় দেন আদালত।
গত মাসে রাসেল সরকারকে আদালতে দুই বিচারকের উপস্থিতিতে ক্ষতিপূরণ বাবদ পাঁচ লাখ টাকার চেক দেয় গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য এক মাস সময় চেয়ে আবেদন করে। এর মধ্যে ভাগে ভাগে টাকা দেবে বলে জানান। তখন আদালত বলেন, ভাগে ভাগে না, একসঙ্গে দিতে হবে।
এরপর এক মাসের মধ্যে বাকি ৪৫ লাখ টাকা রাসেল সরকারকে দেওয়ার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে রাসেল সরকারের ক্ষতিগ্রস্ত ডান পায়ের চিকিৎসা সাভারের সিআরপিতে করানোর ও বাঁ পায়ে কৃত্রিম পা লাগানোর চিকিৎসা করানোর আদেশ দেন আদালত। আজ বাকি টাকা পরিশোধের কথা ছিল।
আদালতে সকাল থেকে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে এসেছিলেন রাসেল সরকার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ মানুষ। ১০ দিন আগে ডান পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে । আমার পক্ষে এভাবে কষ্ট করে বারবার আসা সম্ভব নয়। হাইকোর্ট যে সময় দিয়েছেন, এর মধ্যে বাকি টাকা পরিশোধ করা হোক।’
রাসেল সরকারের আইনজীবী শামসুল হক রেজা বলেন, ‘আদালত যে এক মাস সময় দিয়েছিলেন, আমরা চেয়েছিলাম এই সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করা হোক। কিন্তু তারা দিতে পারেনি। এখন আমরা আশা করছি, আদালত যে তারিখ দিয়েছেন, সে সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করবে তারা।’
রাসেলের পা হারানোর ঘটনায় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনজীবী উম্মে কুলসুমের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ মার্চ হাইকোর্ট এক আদেশে দুই সপ্তাহের মধ্যে রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রয়োজন হলে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার এবং কাটা পড়া বাঁ পায়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিম পা লাগানোর খরচ দিতে ওই পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়।