রাজনীতিবিদের বড় অর্জন জনগণের ভালোবাসা: কাদের

বিমানবন্দরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। ঢাকা, ১৫ মে। ছবি: সংগৃহীত
বিমানবন্দরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। ঢাকা, ১৫ মে। ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি আজ বুধবার বিকেল পাঁচটা ৫০ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। পরে সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘একজন রাজনীতিবিদের সবচেয়ে বড় অর্জন জনগণের ভালোবাসা পাওয়া, যা আমি পেয়েছি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সারা দেশের মানুষ দলের এবং দলের বাইরের সবাই আমার জন্য দোয়া করেছেন। এমনকি প্রবাসী বাঙালিরা আমার পাশে ছিলেন। সবচেয়ে বড় পাওয়া হলো মানুষের ভালোবাসা, আমি তা অর্জন করেছি। এত ভালোবাসা মানুষের, এত দোয়া আমি পেয়েছি। সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সবার কাছে কৃতজ্ঞতা রইল, আমি আপনাদের পাশে আছি।’

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দুই মাস ১১ দিন আগে আমার জীবন ছিল চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। বাঁচব কিনা এ নিয়ে সংশয় ছিল। সেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পরম করুণাময় আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় এবং আমাদের প্রিয় নেত্রী—যিনি চরম সংকটে মা তাঁর সন্তানের জন্য যা করেন, তিনি আমার জন্য তা-ই করেছেন। তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা আমার জানা নেই।’

মন্ত্রী কাদের আরও বলেন, ‘শেখ রেহানা, তিনি কোরআন শরিফ পাঠ করে আমার জন্য দোয়া করেছেন। তাঁর প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা। যদিও সেই সময়ে আমার মধ্যে আমি ছিলাম না। শুনেছি আপনজন এই সময় কাছে এসে ডাকলে মৃত্যুপথযাত্রী সাড়া দেয়। শেখ হাসিনা আমাকে নাম ধরে ডেকে ছিলেন, তখন আমি সারা দিয়েছিলাম, এটা পরে আমাকে বলেছে।’

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আসুন আমরা নতুন উদ্যমে কাজ করে নেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করি। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রতি, আমার অনুপস্থিতিতে তাঁরা টিমওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হতে দেননি।

চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আর পাঁচ মিনিট পরেও যদি আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আসতাম, তাহলে অন্য ঘটনাও ঘটে যেতে পারত। আপনারা কি তা ভেবেছেন? তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক, মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসক এবং দেবী শেঠির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন মন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আহমদ হোসেন, সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীনসহ আওয়ামী লীগের নেতারা বিমানবন্দরে ওবায়দুল কাদেরকে স্বাগত জানান।

গত ২ মার্চ সকালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ঢাকার বিএসএমএমইউতে ভর্তি হলে এনজিওগ্রামে ওবায়দুল কাদেরের হৃৎপিণ্ডের রক্তনালিতে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর মধ্যে একটি ব্লক স্টেন্টিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ করেন চিকিৎসকেরা। তাঁর অবস্থার কিছুটা স্থিতিশীল হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৪ মার্চ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়।

সিঙ্গাপুরে কয়েক দিন চিকিৎসার পর গত ২০ মার্চ কার্ডিও থোরাসিক সার্জন ডা. শিভাথাসান কুমারস্বামীর নেতৃত্বে ওবায়দুল কাদেরের বাইপাস সার্জারি হয়। ছয় দিন পর তাঁকে আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। এরপর তিনি বাসা ভাড়া নিয়ে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছিলেন।