সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা, আরও ৫৫ রোহিঙ্গা উদ্ধার

সাগরপথে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা যেন থামছেই না। গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টার সময় কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ থেকে আরও ৫৫ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার ব্যক্তিদের মধ্যে ৩১ জন নারী, ১৪ জন পুরুষ ও ১০ শিশু রয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া এলাকা থেকে ২৪ রোহিঙ্গা ও বুধবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে টেকনাফের বাহারছড়ার নোয়াখালীপাড়া সাগর তীরবর্তী এলাকা থেকে ৩১ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের ও টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম এস দোহা বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

উখিয়া থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের জন্য মঙ্গলবার রাতে বেশ কিছু রোহিঙ্গাকে লম্বরীপাড়া সাগর তীরবর্তী এলাকায় জড়ো করা হয়েছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারী দলের সদস্যরা পালিয়ে গেলেও ২৪ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে পুলিশ। এদের মধ্যে ১১ জন নারী, ৭ জন পুরুষ ও ৬ শিশু রয়েছে।

অপরদিকে আজ বুধবার সকালে টেকনাফের বাহারছড়ার নোয়াখালীপাড়া এলাকা দিয়ে রোহিঙ্গাদের মালয়েশিয়ায় পাচার করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় ২০ জন নারী, ৭ জন পুরুষ ও ৪ শিশুসহ ৩১ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। তবে কোনো পাচারকারীকে আটক করা যায়নি।

উখিয়া থানা-পুলিশের হেফাজতে থাকা মিজানুর রহমান (২৫) নামের এক রোহিঙ্গা যুবক বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন শুরুর পর পরিবার নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন তিনি। এখানে আশ্রয় নেওয়ার পর কিছু ত্রাণসামগ্রী পেলেও বেকার জীবন যাপন করতে হচ্ছিল। তাই পূর্বপরিচিতদের মাধ্যমে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের ও টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এ বি এম এস দোহা প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার করা রোহিঙ্গাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দালালদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।

১ মার্চ থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকা থেকে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টার সময় ১৭ দফা অভিযান চালিয়ে ৪১৭ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছেন বিজিবি, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এর মধ্যে গত ১২ ও ১৩ মে টেকনাফ, মহেশখালী ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে ৬৯ রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ১৩ জন দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: