বিএনপি নেতা পিন্টুর বিরুদ্ধে চুরির মামলায় অভিযোগ গঠন

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুকে আজ বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুকে আজ বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর বিরুদ্ধে চুরি ও মারপিটের অভিযোগে একটি মামলার অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের আদালতে এ অভিযোগ গঠন করা হয়।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ভূঞাপুর উপজেলার ভদ্রশিমুল গ্রামে ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুর, চুরি ও মারপিট করেন আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১১ জন। আসামিরা ওই দিন বাদীর বাড়ি থেকে দুটি গাভি ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করেন।

টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করার জন্য আবদুস সালাম পিন্টুকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গতকাল বুধবার টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে আনা হয়। আজ দুপুর ১২টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আবদুস সালাম পিন্টুকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নওরিন মাহবুবের আদালতে হাজির করা হয়। বিচারক আবদুস সালাম পিন্টুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পাঠ করে শোনান।

এ সময় পিন্টুর পক্ষে তাঁর আইনজীবী গোলাম মোস্তফা, ফরহাদ ইকবাল, মাঈদুল ইসলাম আদালতকে বলেন, এটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলা। ঘটনার যে সময় দেখানো হয়েছে, তখন আবদুস সালাম পিন্টু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের জন্য নির্বাচনী নিয়ন্ত্রণ কক্ষে অবস্থান করছিলেন। বিবাদী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্যের পরে সালাম পিন্টুসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

অভিযোগ গঠন শেষে আবদুস সালাম পিন্টুকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেল সুপার মঞ্জুর হোসেন বলেন, আজ তাঁকে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে রাখা হবে। পরে কাল শুক্রবার ডিআইজি প্রিজনের নির্দেশনা অনুযায়ী অন্য কোনো কারাগারে পাঠানো হবে।

মামলার বাদী গাবসারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া অভিযোগ করেন, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ভদ্রশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থী খন্দকার আসাদুজ্জামানের নৌকা প্রতীকের এজেন্ট ছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সালাম পিন্টুর নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা তাঁর (বাদীর) ভদ্রশিমুল গ্রামের বাড়িতে প্রবেশ করে তাঁর স্ত্রীসহ বাড়ির লোকজনদের মারপিট করেন। এ সময় তাঁরা নগদ টাকা, দুটি গাভি, বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যান। তিনি মামলায় উল্লেখ করেন, ঘটনার পর থানায় মামলা করতে গেলে সালাম পিন্টুর কারণে মামলা নেওয়া হয়নি। পরে তিনি ঘটনার ১১ বছর পর মামলা করেন।

আবদুস সালাম পিন্টু ১৯৯১ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেপ্তার হন। তারপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। গ্রেনেড হামলা মামলায় তাঁর ফাঁসির দণ্ড দিয়েছেন আদালত।