গভীর রাতে চলছিল বাল্যবিবাহের আয়োজন

বাল্যবিবাহ । প্রতীকী ছবি
বাল্যবিবাহ । প্রতীকী ছবি

বাল্যবিবাহের আয়োজনের খবর পেয়ে প্রশাসন বাধা দিয়েছিল। তা উপেক্ষা করে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে বিয়ে সম্পন্ন করতে চেয়েছিল উভয় পরিবার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হস্তক্ষেপে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় বন্ধ হলো বাল্যবিবাহ।

স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও ইউএনওর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ছেলেমেয়ে দুজনই অপ্রাপ্তবয়স্ক। ছেলের বয়স ১৫, রংমিস্ত্রির কাজ করে। মেয়ের ১৫ বছর পূর্ণ হয়নি, স্থানীয় একটি মাধ্যমিক স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে সে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই পরিবার তাদের বিয়ের আয়োজন করে।

বিয়ের বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধ করা হয়। কিন্তু বাধা উপেক্ষা করে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত একটার দিকে গোপনে বিয়ে সম্পন্ন করতে চেয়েছিল উভয় পরিবার। বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুল আলম পুলিশ নিয়ে বিয়েবাড়িতে হাজির হন। তিনি বিয়ে বন্ধ করতে অনুরোধ জানান। কিন্তু মেয়েটি ও তাঁর পরিবারের লোকজন এই বিয়ে বন্ধ করতে চাননি।

পরে ইউএনও ফরিদা ইয়াসমিন রাত পৌনে দুইটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে মেয়েটিসহ উভয় পরিবারকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে এই বিয়ে বন্ধ করেন। একই সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না এই মর্মে মুচলেকা নেওয়া হয়।

ইউএনও ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘রাত একটার দিকে ওসি আমাকে ফোন করে বিয়ের ব্যাপারে জানান। মেয়েটি ও তার অভিভাবক একরোখা। তারা বিয়ে বন্ধ করতে চাইছে না। পরে আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের সহায়তায় স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও মেয়েটি যে স্কুলে পড়ে, সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নিয়ে দেড় ঘণ্টা ধরে বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করেছি। মেয়েটির পরিবার হতদরিদ্র। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সহায়তা করা হবে।’

ইউএনও ফরিদা ইয়াসমিন উপজেলায় যোগদানের পর গত এক বছর আট মাসে এ নিয়ে ৫২টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছেন। এর মধ্যে অসচ্ছল পরিবারের চারজন ঝরে পড়া মেয়েকে নিজ খরচে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করছেন।