শেরপুরে স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ

বগুড়ার শেরপুরে গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে করতোয়া নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো। গত শনিবার উপজেলার ধড়মোকাম পূর্বপাড়া গ্রাম এলাকায়।  প্রথম আলো
বগুড়ার শেরপুরে গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে করতোয়া নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো। গত শনিবার উপজেলার ধড়মোকাম পূর্বপাড়া গ্রাম এলাকায়। প্রথম আলো

করতোয়া নদীর এপারে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সাতটি গ্রাম। ওপারে ছয়টি গ্রাম। সেতু বা সাঁকো না থাকায় দুই পারের ১৩ গ্রামের লোকজন দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এই দুর্ভোগ দূর করতে স্থানীয় একটি গ্রামের বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করছেন।

উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ধড়মোকাম হঠাৎপাড়া গ্রামের পূর্ব পাশে করতোয়া নদীর ওপর এই সাঁকো। সাঁকোর দৈর্ঘ্য অন্তত ২৫০ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট। গত ২৫ এপ্রিল থেকে ধড়মোকাম গ্রামের লোকজনের উদ্যোগে নদীর ওপর এই সাঁকো তৈরির কাজ চলছে।

এই সাঁকো তৈরি বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ বলেন, এই সাঁকো তৈরিতে বাঁশসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী কিনতে অন্তত ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে ধড়মোকাম গ্রামের ব্যবসায়ী শেরপুর সেমি অটোরাইস মিল কমিটির সভাপতি ও ধড়মোকাম স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু তালেব আকন্দ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও সাঁকো তৈরি বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ওহেদ আলী দিয়েছেন ২০ হাজার টাকা। এ ছাড়া গ্রামের প্রতিটি পরিবার সাধ্যমতো সাঁকো তৈরির কাজে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে দিচ্ছে। সাঁকো প্রস্তুত করতে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির সদস্যরা এই কাজের দেখভাল করছেন।

ধড়মোকাম হঠাৎপাড়া গ্রামের কৃষক তৈয়ব আলী বলেন, এই সাঁকো নির্মিত হলে ১৩ গ্রামের লোকজনের দুর্ভোগ দূর হবে। এর মধ্যে নদীর এপারে শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ধড়মোকাম পূর্বপাড়া, দহপাড়া, কৃষ্ণপুর, যমুনাপাড়া, আন্দিকুমড়া, ফুলিতলা ও রহমতপুর গ্রাম এবং ওপারে খানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর, ভক্তপাড়া, ছাতিয়ানী, চাঁদপুর, খাগা, দড়িখাগা গ্রাম।

গত শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, এই সাঁকো তৈরিতে কাজ করেছেন অন্তত ৩০ জন। তাঁদের কেউ নদীতে বাঁশ পুঁতছেন আবার কেউ বাঁশের ওপর লোহারকাটা মারছেন।

সাঁকো তৈরির সময় নদীর পাড়ে ছিলেন ধড়মোকাম পূর্বপাড়া গ্রামের তিন নারী। তাঁরা বলেন, নদীর পশ্চিম পাড়ে ধড়মোকাম গ্রামে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা রয়েছে। নদীর পূর্ব পাড়ের খানপুর ইউনিয়নের ছয়গ্রামের ছেলেমেয়েরা ধড়মোকাম গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়া করে। আগে তাঁদের সন্তানদের নদী পাড়ি দিয়ে ক্লাস করতে হতো। এখন সাঁকো নির্মিত হওয়ায় তাঁদের সন্তানদের ক্লাসে যেতে আর কষ্ট থাকবে না।