মেয়েটির চার মাস ধরে স্কুলে যাওয়া বন্ধ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পথেঘাটে বখাটের উত্ত্যক্তের কারণে চার মাস ধরে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি তার অশ্লীল ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় মেয়েটি মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছে। এ ঘটনায় থানায় জিডি করেও নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারছে না তার পরিবার। তাই অভিভাবকেরা মেয়েটিকে সার্বক্ষণিক পাহারা দিয়ে রাখছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই ছাত্রী নান্দাইল উপজেলার চর বেতাগৈর ইউনিয়নের বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার বাবা কৃষিজীবী।

গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় মেয়েটির বাড়িতে গেলে তার মা ও বাবা বলেন, তাঁরা পড়াশোনা করেননি। কৃষিকাজ করে মেয়েকে বিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। বখাটের কারণে মেয়ের পড়াশোনাও শেষ হওয়ার পথে। তার ওপর মেয়েকে দিনরাত চোখে চোখে রাখতে হচ্ছে। এভাবে কি কোনো মানুষকে পাহারা দিয়ে রাখা যায়?

একজন প্রতিবেশী বলেন, দরিদ্র বলেই ছাত্রীটির পরিবারের আর্তনাদ কেউ শুনছে না।

মেয়েটির অভিযোগ, বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে মো. শাহীন মিয়া ও তাঁর সহযোগী শান্ত মিয়া তাকে রাস্তায় আটকে টানাহেঁচড়া করেন। জোর করে মুঠোফোনে ছবি তুলে কুপ্রস্তাব দেন। শাহীনের হাত থেকে বাঁচার জন্য সে প্রথম দিকে বিদ্যালয়ে যাওয়া কমিয়ে দেয়। একপর্যায়ে বিদ্যালয়ে যাওয়াই বন্ধ করে দেয়।

মেয়েটি জানায়, পড়াশোনার ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য সে পাশের মধুপুর বাজারের এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তে শুরু করে। ৬ মে বেলা আড়াইটার দিকে ওই শিক্ষকের কাছে যাওয়ার জন্য সে বাড়ি থেকে বের হয়। কিছু দূর যাওয়ার পর শান্ত ও শাহীন আবার তার পথরোধ করে অশ্লীল মন্তব্য করতে থাকেন। এর প্রতিবাদ করলে তাঁরা তার নামে মিথ্যা তথ্য ইন্টারনেটে ছাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। কয়েক দিন পর ফেসবুকে তার বিকৃত ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

বাড়িতে গিয়ে শাহীন মিয়াকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মা মোছা. নাজমা বেগম তাঁর ছেলেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। শাহীনের বাবাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাঁর চাচা মো. কাজিম উদ্দিন বলেন, ‘এ ধরনের সমস্যার কথা মেয়েটি আমাদের আগে জানালে একটা বিহিত করতে পারতাম।’ শান্ত মিয়াকে গ্রামে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।