পর্যটকদের আবর্জনায় ম্লান আলুটিলা গুহা

আলুটিলা গুহায় জ্বলছে পর্যটকদের ফেলে যাওয়া মশাল। সম্প্রতি খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রে। প্রথম আলো
আলুটিলা গুহায় জ্বলছে পর্যটকদের ফেলে যাওয়া মশাল। সম্প্রতি খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রে। প্রথম আলো

খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের অন্যতম আকর্ষণ প্রাকৃতিক গুহা। এটি দেখতে আসে প্রতিদিন কয়েক শ পর্যটক। তবে দেখতে আসা পর্যটকদের ব্যবহৃত মশালসহ নানা আবর্জনায় সৌন্দর্য হারাচ্ছে গুহাটি। এতে ওই এলাকার পরিবেশও দূষণের শিকার হচ্ছে।

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের ঘুটঘুটে অন্ধকার পাথরের গুহার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেতে সময় লাগে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। এ সময় পর্যটকেরা কেরোসিনের মশাল ব্যবহার করে থাকেন। তবে অনেক পর্যটক গুহার ভেতরে মশাল ফেলে আসেন। অনেকে চিপস, পানীয় ও খাবারের প্যাকেটও ফেলে আসেন গুহায়।

সম্প্রতি খাগড়াছড়ি সদর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের পাশে আলুটিলা গুহায় গিয়ে দেখা যায়, গুহা থেকে বের হওয়ার পথে পর্যটকদের ফেলে দেওয়া মশালে জ্বলছে আগুন। এ ছাড়া গুহার ভেতরে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে পর্যটকদের ব্যবহৃত মশালের স্তূপ। মশালের কেরোসিনের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। গুহার ভেতরে পাথরের গায়ে পড়েছে ধোঁয়ার কালো আস্তরণ। গুহার ভেতর বয়ে যাওয়া ঝিরির পানির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে মশালের কেরোসিন। এ ছাড়া গুহায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে মশাল, চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতলসহ নানা আবর্জনা।

আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক কোকনাট ত্রিপুরা বলেন, দুই দিন পরপর গুহার ভেতরে পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু পর্যটকেরা সচেতন না হওয়ার কারণে প্রতিদিন ময়লা–আবর্জনা জমে যাচ্ছে।

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফজলুল হক বলেন, অনেক পরিকল্পনা করে দল বেঁধে এসেছেন গুহা দেখতে। কিন্তু গুহা থেকে বের হওয়ার সময় এক সহকর্মীর ভাঙা মশালে পা কেটে যায়। বাংলাদেশের এমন একটি নৈসর্গিক প্রাকৃতিক গুহার প্রতি সবার যত্নবান হওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

খাগড়াছড়ি বেলা নেটওয়ার্কের সদস্য মুহাম্মদ আবু দাউদ বলেন, এখানকার প্রকৃতি ও পরিবেশকে ধরে রাখার জন্য পর্যটনের পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার জ্ঞান থাকা দরকার। গুহার প্রবেশের আগে কিংবা মশাল বিক্রির সময় যদি দর্শনার্থীদের সচেতন করে মশাল নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে বাধ্য করা হয়, তাহলে গুহার পরিবেশ ঠিক থাকবে।

এ ছাড়া পর্যটক এবং কর্তৃপক্ষের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। সচেতন না হলে মশালের আগুনে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা হতে পারে।

আলুটিলার গুহা পরিবেশের বিষয়টি খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলামকে বলেন, এ বিষয়ে শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।