কসবায় টিলা ধসে স্কুলছাত্র নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় টিলা ধসে স্কুলছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল শনিবার রাতে গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। নিহত কেফায়তুল ইসলামের বাবা মো. জালাল মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন।

পুলিশ গতকাল শনিবার রাতে মামলার আসামি বিষ্ণাউড়ি গ্রামের মো. হুমায়ুন (৩৫) ও মো. ইকবাল হোসেনকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আজ রোববার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিচারিক হাকিমের আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।

নিহত কেফায়তুল ইসলাম (১৩) কসবা উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের কালসার গ্রামের জালাল মিয়ার ছেলে। কেফায়তুল বিষ্ণাউড়ি গ্রামের তাঁর খালার বাড়িতে থেকে জয়নগর লিয়াকত আলী উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত।

উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিষ্ণাউড়ি গ্রামের আমজাদ হোসেন ভূইয়া ওরফে জাকির হোসেন টিলার নিচ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ড্রেজার দিয়ে পাহাড়ি বালু উত্তোলন করছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলা প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছিল। তারপরও জাকির নিয়মিত বালু উত্তোলন করছেন।

শনিবার সকালে সেই ধারাবাহিকতায় টিলার নিচ থেকে বালু উত্তোলন করছিলেন। এ সময় স্কুলছাত্র কেফায়তুল ওই টিলার ওপর যায়। নিচে মাটি না থাকায় এ সময় ওই টিলাটি ধসে পড়ে। এতে কেফায়তুল গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় ড্রেজার শ্রমিক মনিয়ন্দ গ্রামের ফারুক মিয়া (৩০) ও বিষ্ণাউড়ি গ্রামের হারুন মিয়া (৩৫) আহত হয়েছেন। তাঁদের তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কেফায়তুলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া আহত বাকি দুজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

খবর পেয়ে কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে টিলার নিচ থেকে স্থানীয় শ্রমিক নিয়ে একটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করে থানায় নিয়ে আসেন। অপর একটি ড্রেজার মেশিন তাৎক্ষণিকভাবে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল শনিবার বিকেলে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।

কসবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হত্যা মামলার আলামত হিসাবে খনন যন্ত্র জব্দ করা হয়েছে।

কসবা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, খনন যন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করতে গিয়ে স্কুলছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় মো. আনোয়ার হোসেনকে প্রধান আসামি করে আটজনের নামে হত্যা মামলা করেছে নিহতের বাবা। এদের মধ্যে থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।