৯৯৯-এ ফোন, অতঃপর

বাড়ির পেছনে মাদকসেবনে বাধা দেওয়ায় হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন শাহজাহান খন্দকার নামের এক ব্যক্তি। তাঁর ভাষ্য, ৯৯৯ নম্বরে ফোন দেন তিনি। পুলিশ এসে হামলাকারীদের ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু পরদিন আবার ছেড়ে দেয়। এখন হামলাকারীরা তাঁকে গ্রামছাড়া করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন।

গত শনিবার নাটোরের লালপুর উপজেলার গোধড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শাহজাহানের ভাষ্য, গতকাল রোববার পুলিশ হামলাকারীদের ছেড়ে দেয়। এরপর থেকেই তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

গতকাল বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো লিখিত অভিযোগে মো. শাহজাহান খন্দকার ও তাঁর জামাই মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ওই গ্রামের আবু হানিফ, সবুজ, রকি মণ্ডল, মজনু, ইয়ানুস আলী ও আলমগীর হোসেন প্রায়ই তাঁর বাড়ির পেছনের বাঁশবাগানে বসে মাদকসেবন করেন। শনিবার রাত ১১টার দিকেও তাঁরা সেখানে মাদকসেবন করছিলেন। শাহজাহান খন্দকার তখন তাঁদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁরা তাঁর বাড়িতে হামলা চালান। তাঁরা দা, কুড়াল দিয়ে ঘরের টিন ফুটো করেন এবং ভাঙচুর চালান। বাধা দিলে শাহজাহান খন্দকার, তাঁর স্ত্রী শুকজান ও নাতি-নাতনিকে মারপিট করা হয়। নিরুপায় হয়ে তিনি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে পুলিশের সহযোগিতা চান। খবর পেয়ে ওয়ালিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (আইসি) নজরুল ইসলাম ফোর্সসহ তাঁর বাড়িতে যান। তাঁরা ইয়ানুস ও মজনুকে আটক করেন এবং হাঁসুয়া-কুড়াল জব্দ করেন। এ ব্যাপারে তিনি লিখিত অভিযোগ দিতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা তাতে রাজি হননি। পরে মুঠোফোনে পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আটক দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

লিখিত অভিযোগে শাহজাহান খন্দকার বলেন, পরের দিন রোববার সন্ধ্যায় ইয়ানুস ও মজনু গ্রামে ফিরে এসে শাহজাহানকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। তিনি মুঠোফোনে পুলিশ কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। আইসি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘তোমরা গরিব মানুষ। এলাকায় থাকতে হবে। তাই মীমাংসা করে দিয়েছি। তোমার ঘরবাড়ি মেরামত করে দেবে।’ পুলিশের এই কথায় তিনি হতাশ হন বলে জানান।

পরে শাহজাহান সাংবাদিকদের মাধ্যমে ঘটনাটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি ও পুলিশ সুপারকে জানানোর জন্য লিখিত অভিযোগ পাঠান। মো. শাহজাহান খন্দকার বলেন, মাদকসেবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়ায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কিন্তু পুলিশের কাছে যেতে সাহস পাচ্ছেন না।

ওয়ালিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি নজরুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় মুঠোফোনে জানান, যাঁদের ধরা হয়েছিল, তাঁরা কেউ মাদকসেবী নন। তাই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মাদকসেবনের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা করানো হয়নি। তবে তাঁদের মাদকসেবী মনে হয়নি। এ ছাড়া তাঁরা মীমাংসা করে নিতে চেয়েছেন।