দুর্নীতিবাজদের জবাবদিহি করতেই হবে: ইকবাল মাহমুদ

ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি
ইকবাল মাহমুদ। ফাইল ছবি

দুর্নীতি করলে তাকে আইনের আওতায় আসতেই হবে—এই বার্তা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সফল হয়েছে বলে মনে করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, দুর্নীতির অভিযোগে অনেক প্রভাবশালীকে আইনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। পদ-পদবি কিংবা অন্য কোনো পরিচয়ে কাজে হচ্ছে না। আজ হোক কাল হোক দুর্নীতিবাজদের জবাবদিহি করতেই হবে।

আজ মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন ও নরওয়ের প্রতিষ্ঠান সিএমআইয়ের জ্যেষ্ঠ গবেষক ইনজি অ্যামুন্ডসন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বেসরকারি খাতের দুর্নীতির বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশর ( টিআইবি) ভূমিকা নিয়ে এ মতবিনিময় হয়।

বৈঠকে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, সার্বিকভাবে টিআইবি ভালো কাজ করছে। তারা তাদের গবেষণার মাধ্যমে দুর্নীতির উৎস শনাক্তকরণসহ তা নিরসনে কিছু কাজ করছে। তিনি বলেন, টিআইবির সঙ্গে দুদকের সম্পর্ক রয়েছে। তাদের সঙ্গে কমিশনের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং এর ভিত্তিতে বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, টিআইবি শিক্ষা,বিশেষ করে প্রাথমিক ওমাধ্যমিক শিক্ষায় যেসব মেগা কর্মসূচি রয়েছে,এগুলোর প্রান্তিক পর্যায়ের কার্যক্রমের ওপর গবেষণা করতে পারে। এতে শিক্ষার ক্ষেত্রে বিদ্যমান দুর্নীতি-অনিয়ম সম্পর্কে সরকারের নীতিনির্ধারকেরা যেমন সচেতন হবেন, তেমনি তৃণমূল পর্যায়েও দুর্নীতিবিরোধী সচেতনতা বাড়বে।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, একইভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও টিআইবি গবেষণা করলে এ ক্ষেত্রে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার ত্রুটি-বিচ্যুতি যেমন চিহ্নিত করতে সহজ হবে, তেমনি সমাধানের গবেষণালব্ধ সুপারিশও পাওয়া যেতে পারে। সার্বিকভাবে এ ক্ষেত্রে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে টিআইবির। টিআইবিকে নির্মোহ থেকে এসব গবেষণা করতে হবে।

বেসরকারি খাতের দুর্নীতি সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, এ ক্ষেত্রেও দুর্নীতি রয়েছে। তবে সরাসরি এসব দুর্নীতি দুদকের তফসিলভুক্ত নয়। সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে দুর্নীতির কোনো ঘটনা যখন ঘটে, তখন দুদকের হস্তক্ষেপ করার আইনি সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং দুদক এ দায়িত্ব পালনও করছে।

বেসরকারি খাতে টিআইবির ভূমিকা কেমন হবে, তা জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে সুশাসনের জন্য অনেক আইন রয়েছে। তবে এসব আইনের প্রয়োগের সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট কেন হচ্ছে না? এর মূলে রয়েছে এসব আইনের সঠিক বাস্তবায়ন না হওয়া এবং দুর্নীতি। এ ক্ষেত্রে টিআইবি এবং সিপিডির মতো প্রতিষ্ঠান গবেষণার মাধ্যমে দুর্নীতি-অনিয়মের কারণ, ধরন, ব্যাপকতা শনাক্ত করে তা প্রতিরোধে সুপারিশ প্রণয়ন করতে পারে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সীমাবদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কমিশনের সক্ষমতায় কিছুটা ঘাটতি হয়তো রয়েছে, তা অতিক্রমের জন্য কমিশন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।