'ডিবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারীর অভিযোগ' শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ

ডিবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারীর অভিযোগ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন, ডিবির (পূর্ব) জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার শিকদার মো. হাসান ইমাম। তিনি দাবি করেছেন, প্রতিবেদনটি মিথ্যা, বানোয়াট ও অসত্য।

প্রতিবেদনটি গত ১৫ মে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত হয়।

প্রতিবাদপত্রে শিকদার হাসান ইমাম উল্লেখ করেন, অভিযানের সময় গৃহকর্তা জহুরুল ইসলামকে মারধর এবং জহুরুল ও নাজনা দম্পতির শিশুকে সন্তানকে বিছানায় ছুড়ে ফেলার অভিযোগ অসত্য এবং দলের কেউ লুঙ্গি পরা অবস্থায় ছিল না। অভিযানটি তাঁরা ভিডিওতে ধারণ করেছেন। সেখানে শিশুটিকে খেলতে দেখা যায় এবং নাজনা আক্তারকে বঁটি হাতে পুলিশ সদস্যদের তাড়া করতে দেখা যায়। যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আসামিদের আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তিনি বলেছেন, ডিবি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি প্রয়োজনে বিদেশেও অভিযান চালাতে পারেন এবং তিনি তাঁর নম্বর থেকে কাউকে হুমকি দেননি।

প্রতিবেদকের বক্তব্য

শিকদার হাসান ইমাম তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে যে ভিডিও ক্লিপ হাজির করেছেন সেটির দৈর্ঘ্য ২ মিনিট ৩৫ সেকেন্ড। ওই ভিডিওতে প্রত্যেক পুলিশ সদস্যের গায়ে পোশাক বা ডিবির জ্যাকেট ছিল না এবং নাজনা আক্তারকে ডাকাত ডাকাত বলে বঁটি হাতে হুট করে ঘরে ঢুকে পড়া লোকজনের দিকে তেড়ে যেতে দেখা যায়।

প্রথম আলোর প্রশ্নের জবাবে শিকদার হাসান ইমাম স্বীকার করেছেন তাঁর গায়ে পুলিশের পোশাক বা ডিবির জ্যাকেট কোনোটাই ছিল না। যদিও গুম ও অপহরণ রোধে ২০১৪ সালে পুলিশ সদর দপ্তর সাদা পোশাকে পুলিশি অভিযান নিষিদ্ধ করে।

তা ছাড়া ডিবি কর্মকর্তা ও তাঁর দল পুরো অভিযানের ভিডিও করেননি বলেও স্বীকার করেন। ফলে ওই অভিযানের আদ্যোপান্ত সম্পর্কে ভিডিও দেখে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় না। আইনানুগভাবে নাজনা আক্তার ও তাঁর স্বামীকে আদালতে উপস্থাপনের যে দাবি তিনি করেছেন, তাও সত্য নয়। তিনি প্রচার করার চেষ্টা করছেন আসামি গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে উপস্থাপনের যে বাধ্যবাধকতা আছে সেটার কোনো ব্যত্যয় হয়নি। প্রকৃতপক্ষে তিনি নাজনা ও তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তারে ৭ মার্চ রাত পৌনে ১০ টার দিকে যান। সাজ্জাদুল ইসলাম নামে যে ব্যক্তির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি অভিযান চালান, তিনি মামলা করেন ৮ মার্চ। আদালতে তাঁদের হাজির করা হয় ৯ মার্চ। নাজনা ও তাঁর স্বামী জহুরুলকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর চুক্তিপত্র নিতে যান পুলিশ পরিদর্শক মামুনুর রহমান। সে সময় দূর থেকে তাঁর স্বজনেরা যে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন তাতে সময় ৭ মার্চ দিবাগত রাত ১২ টা ৩৫ মিনিট।

নাজনা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, আচমকা তাঁর ঘরের ভেতর এত লোককে ঢুকে পড়তে দেখে তিনি সত্যিই ভেবেছিলেন ঘরে ডাকাত পড়েছে। যাঁরা আসেন তাঁদের কাছে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিল না।

সাক্ষ্য দিয়েছেন নাজনা

আইজিপি কমপ্লেইন সেলে নাজনা আক্তার, তাঁর স্বামী জুহুরুল ইসলামসহ ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ৪ এপ্রিল তাঁরা আইজিপি কমপ্লেইন সেলে ডিবি কর্মকর্তা ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার তাঁরা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নাজনা আক্তারের ১১ বছরের মেয়েও ওদিন পুলিশের সঙ্গে কথা বলে।