ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা, শিক্ষক গ্রেপ্তার

গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ধর্ষণের পর অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ওই শিক্ষকের নাম সোহেল রানা (৪০)। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা গাজীপুর মেট্রোপলিটনের সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন।

ওই ছাত্রীর পরিবার, পুলিশ ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত বছরের ১২ অক্টোবর ওই স্কুলছাত্রী বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পড়তে যায়। পড়া শেষে ওই ছাত্রী ও তার দুই বান্ধবী বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় শিক্ষক সোহেল ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা আছে বলে তার দুই বান্ধবীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপর ছাত্রীকে স্কুলের অফিস কক্ষে ডেকে নেন সোহেল। অফিস কক্ষেই সোহেল ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। এ সময় ছাত্রীটি কান্নাকাটি শুরু করলে সোহেল তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেন। ঘটনাটি কাউকে বললে তাকেসহ পরিবারের সবাইকে সোহেল খুন করে ফেলবেন বলে হুমকি দেন। ভয়ে ওই ছাত্রী ঘটনাটি কাউকেও জানায়নি। তবে সম্প্রতি ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনেরা তাকে হাসপাতালে নেন। এ সময় চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানান, ওই ছাত্রী প্রায় সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এরপর ওই ছাত্রী সোহেল কর্তৃক ধর্ষণ ও প্রাণনাশের হুমকির কথা পরিবারকে জানায়। বিষয়টি জানার পরে ছাত্রীর পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। পরে বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে সমাধান করার জন্য ছাত্রীর স্বজনেরা বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেন। তবে সেখানে মীমাংসা হয়নি। এরপর ওই ছাত্রীর বাবা সোমবার রাতে গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। মামলার পরপরই সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সোহেলকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার হওয়ায় সোহেলের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে মুঠোফোনে কথা হয় সোহেলের ভাই মো. মামুনের সঙ্গে। মামুন বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। পূর্বশত্রুতার জেরে ওই ছাত্রী তাঁর ভাইয়ের নাম বলছে।

স্থানীয় কাউন্সিলর তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসাযোগ্য নয় বলে ওই ছাত্রীর পরিবারকে থানা-পুলিশের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সমীর চন্দ্র সূত্রধর বলেন, সোহেল এ ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার বিষয়ে অস্বীকার করেছেন। স্কুলছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে ওই ছাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ডিএনএ টেস্ট করা হবে।

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভূষণ দাস বলেন, পরীক্ষার পরে ওই ছাত্রীর ছয় থেকে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।