দুদকের ৪ অভিযান

অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে কুষ্টিয়া, জয়পুরহাট ও ঢাকায় চারটি অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার এসব অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছেন দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য।

দুদক জানিয়েছে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ব্যাপক গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ পেয়ে দুদকের কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়। অভিযানের সময় দুদকের দলটি বিদ্যুৎ–সংযোগের জন্য গ্রাহকের আবেদন, প্রতিষ্ঠানটির দৈনন্দিন কার্যক্রম ও সেবা দেওয়ার তালিকা যাচাই করা হয়। দুদক দেখেছে, আবাসিক সংযোগের ক্ষেত্রে আবেদনের তারিখ থেকে ২–৩ দিনের মধ্যে লাইন–সংযোগ দেওয়ার কথা থাকলেও কিছু ক্ষেত্রে আবেদন অনুমোদন হলেও সংযোগ দেওয়া হয়নি। 

দুদকের পর্যবেক্ষণ আমলে নিয়ে ওই দপ্তরের উপমহাব্যবস্থাপক তাৎক্ষণিকভাবে দায়ী দুই ওয়্যারিং পরিদর্শকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

দুদকের দলটি ওই অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর অফিসে উপস্থিতি নিশ্চিত করা, দালালের অনুপ্রবেশ বন্ধ করা, আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কাউন্টার ও তথ্যকেন্দ্রে সার্বক্ষণিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা, বিধিমোতাবেক পাওয়া আবেদনের ওপর জরুরি সেবা প্রদান নিশ্চিত করা এবং অফিসের সার্বক্ষণিক মনিটরিং জোরদার করার সুপারিশ করে।

কুষ্টিয়া হাউজিং এস্টেটের সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে দুদকের একই দল সেখানে আরেকটি অভিযান চালায়। দলটি নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ও প্রত্যাশী সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে পরিদর্শনের সময় নমুনাস্বরূপ রাস্তার পুরুত্ব, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ পরিমাপ করে। পরিমাপে রাস্তার পুরুত্ব কম পাওয়া যায়। দুদক বলছে, আপাতদৃষ্টিতে রাস্তার কাজের গুণগত মান সন্তোষজনক হয়নি। নির্মাণকাজে প্রকৃত অনিয়ম ও দুর্নীতি উদ্‌ঘাটনের জন্য এ বিষয়ে অনুসন্ধানের অনুমোদন চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে দুদকের দলটি।

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে বিদ্যালয় সংস্কারের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরেকটি অভিযান চালায় দুদকের দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়। দলটি অভিযানের সময় তথ্য পায়, ২০১৭ সালে দেবীগঞ্জ উপজেলার ঝলঝলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযানে গিয়ে দুদকের কাছে মনে হয়েছে, বিদ্যালয়ে নামমাত্র কাজ করে অবশিষ্ট টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ অনিয়মের সঙ্গে প্রকল্পের সভাপতি, প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের (পিআইও) উপসহকারী প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রাথমিকভাবে জড়িত মর্মে প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে। তাই দলটি এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছে।

এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারীদের বদলিতে অনিয়মের অভিযোগে অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) মতিঝিল অফিসে অভিযান চালায় দুদক। দুদকের কাছে অভিযোগ আসে, ওই দপ্তরের পরিসংখ্যানবিদ খলিলুর রহমান ও ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট বদলি সিন্ডিকেটের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। দুদক দলের উপস্থিতিতে পরিচালক (স্বাস্থ্য) অভিযুক্ত কর্মচারীদের সতর্ক করেন। দলটি পরিচালকের দপ্তর থেকে বদলি–সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে কমিশনে বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে দলটি।