ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে ব্যবস্থা: ডিএমপি কমিশনার

আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত মতবিনিময় সভার আয়োজন করে মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও ঢাকা জেলা বাস–মিনিবাস সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল, ঢাকা, ২৫ মে। ছবি: বাসস
আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত মতবিনিময় সভার আয়োজন করে মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও ঢাকা জেলা বাস–মিনিবাস সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল, ঢাকা, ২৫ মে। ছবি: বাসস

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ঈদে যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিআরটিএর নির্ধারিত চার্টের বাইরে কেউ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে পারবে না। আর মাদকাসক্ত কোনো লোক গাড়ির চালক, বাসচালকের সহকারী হতে পারবেন না।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন। মহাখালী বাস টার্মিনাল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও ঢাকা জেলা বাস–মিনিবাস সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আয়োজনে এবং ট্রাফিক উত্তর বিভাগের সহযোগিতায় এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রবণতা লক্ষ করা যায়। আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছে, সেই সঙ্গে অন্য বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থাও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে কাজ করছে। চার্টের নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই যেই হোক, যত ক্ষমতাশালীই হোক অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বাসমালিকদের
মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, গাড়ির চালক, হেলপারসহ যানবাহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কেউ মাদকাসক্ত বলে সন্দেহ হলে তাঁকে ডোপ টেস্ট করান। তাঁকে গাড়ির কাজে নিয়োগ করবেন না। প্রয়োজনে পুলিশ আপনাদের সহযোগিতা করবে। মাদকাসক্ত কোনো লোক গাড়ির চালক, বাসচালকের সহকারী হতে পারবে না।

ঈদ সামনে রেখে ডিএমপির পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘কোনো রকম নিরাপত্তাঝুঁকি ছাড়াই নগরবাসী পরিবার-পরিজনসহ শপিং, ঈদ উৎসব ও নির্বিঘেœচলাচল করবে, তাদের নিরাপত্তাহীনতা ঘটবে না। এই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আমরা পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ভাইদের সঙ্গে মতবিনিময় করছি।’ তিনি বলেন, সড়ক পরিবহনের শৃঙ্খলা নিয়ে মালিক-শ্রমিক ও প্রশাসনকে ভাবতে হবে। পরিবহন ব্যবস্থা যদি দীর্ঘদিন অনিয়মের মধ্যে থাকে তাহলে এই পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। যানবাহন ও সড়ক সেক্টরে একটি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা একান্ত জরুরি।

অজ্ঞান পার্টি প্রতিরোধে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ডিএমপির পক্ষ থেকে ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রোজার আগে থেকে এসব অপরাধের বিরুদ্ধে কাজ করছি, তথ্য সংগ্রহ করছি এবং নিবর্তনমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, শতাধিক অজ্ঞান পার্টি, চোর ও ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। রাতদিন ২৪ ঘণ্টা পোশাকে ও সাদাপোশোকে নগরীতে পুলিশ নজরদারি করছে। বিশেষ করে বাস টার্মিনাল, লঞ্চঘাট ও রেলস্টেশনে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

গাড়ি চালাতে হলে অবশ্যই বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস থাকার নির্দেশনা দিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মালিক-শ্রমিক ও ট্রাফিক পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি নিশ্চিত করবে, কেউ যাতে ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি নিয়ে টার্মিনাল ছেড়ে যেতে না পারে। তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরের প্রতিটি বাহির পথে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশ মোতায়েন করা হবে।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কৃষ্ণ পদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) মোসলেহ উদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. উসমান আলী, মহাখালী বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি হাজী আবুল কালামসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।