খানাখন্দে মানুষের দুর্ভোগ

সংস্কারের অভাবে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।  ছবি: প্রথম আলো
সংস্কারের অভাবে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ছবি: প্রথম আলো

নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের সীতারামপুর-হিজলডাঙ্গা সড়কটি খানাখন্দে ভরা। প্রায় ১৫ বছর ধরে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী। এতে সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের আটটি গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার লোক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

গত শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, নড়াইল-যশোর সড়কের সীতারামপুর বাসস্টেশন থেকে হিজলডাঙ্গা গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের সবটুকুই ইটের। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কটি একটি খালের ওপর দিয়ে চলে গেছে। এই খালের ওপর ২০ গজের একটি সেতু আছে। সেতুটির অবস্থাও করুণ। সেতুর দুটি স্থানে পাটাতনের সিমেন্ট-বালু উঠে গিয়ে রড বেরিয়ে গেছে। স্থানীয় লোকজন চলাচলের জন্য সেখানে বালুর বস্তা দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। সতর্কবার্তার জন্য একটি বাঁশের মাথায় লাল কাপড় টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেতুর দুই পাশের গাইড ওয়াল ভেঙে গেছে। যাত্রী বা মালবোঝাই নছিমন উঠলে সেতু দুলতে থাকে। ভেঙে পড়ার হাতে থেকে রক্ষা পেতে এলাকাবাসী নিজেদের উদ্যোগে সেতুর নিচে বাঁশ-কাঠ দিয়ে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছেন।

এই রাস্তা ব্যবহার করেন—এমন কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, রাস্তা ও সেতু খারাপের জন্য এই সড়ক দিয়ে দিনের বেলায়ও কোনো যান আসতে চায় না। সীতারামপুর, দুর্বাজুড়ি, ইচরবাহা, বাসভিটা, হিজলডাঙ্গা, শালিয়ারভিটা, মুলিয়া, পানতিতা—এই আটটি গ্রামের লোকজন এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন জেলা সদরে যাতায়াত করেন। দীর্ঘ সময় ধরে এটি সংস্কার না করায় তাঁদের দুর্ভোগ বাড়ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়ক পিচ্ছিল হয়ে যায়। যানবাহন না পেয়ে হেঁটে পথ পাড়ি দিতে হয়।

মুলিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুজন গাইন বলেন, ১৫-১৬ বছর আগে এই রাস্তাসহ সেতু নির্মাণ করা হয়। তারপর এর দিকে আর কেউ ফিরে তাকাননি।

হিজলডাঙ্গা গ্রামের কলেজছাত্র জগদীশ বিশ্বাস, সমাপ্ত গাইন বলেন, প্রতিদিন প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ, সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়, সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়সহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে যায়। শুকনো মৌসুমে ভাঙা রাস্তা দিয়ে স্কুল-কলেজে হেঁটে যাওয়া কষ্টকর। আর বৃষ্টি হলে কাদার কারণে অনেকেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ অধিকারী জানান, এই সড়কে ১৫-১৬ বছর আগে ইট বিছানো হয়। বছর যেতে না-যেতেই ইট উঠে যেতে থাকে। এখন সেখানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নছিমন বা যাত্রীবোঝাই নছিমন সীতারামপুর খালের সেতুর ওপর উঠলেই দুলতে থাকে। কয়েক জায়গায় ভেঙে গেছে। বিষয়টি এলজিইডির নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে লিখিত জানিয়েছেন। কাজ হয়নি।

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী বিধান চন্দ্র সমাদ্দার প্রথম আলোকে বলেন, সীতারামপুর-হিজলডাঙ্গা সড়ক এবং সেতু নির্মাণে সাংসদ মাশরাফি বিন মুর্তজার নির্দেশ রয়েছে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে।