সেতুর নিচে কলেজছাত্রের ক্ষতবিক্ষত লাশ

ময়মনসিংহের নান্দাইলে সেতুর নিচে এক কলেজছাত্রের লাশ মিলেছে। রোববার সকালে নান্দাইল ও ত্রিশাল উপজেলার সংযুক্তকারী বালিপাড়া সেতুর নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ছাত্রের পরিবারের সদস্যদের দাবি, দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করে সেতুর নিচে লাশ ফেলে রেখেছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত কলেজছাত্রের নাম মো. তারিফ হাসান। তিনি নান্দাইল উপজেলার চর বেতাগৈর ইউনিয়নের চরভেলামারী গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছেলে। তিনি স্থানীয় খুররম খান চৌধুরী কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

এই ঘটনায় রোববার তারিফের বড় ভাই মাজহারুল ইসলাম মামলা করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নান্দাইল-ত্রিশাল সীমানায় ব্রহ্মপুত্র নদের বালুমহালের ইজারা ডাক নিয়ে তাঁর সঙ্গে একই এলাকার বাচ্চু মেম্বারের বিরোধ রয়েছে। এ কারণে বাচ্চু মেম্বার ও তাঁর সহযোগীরা মাজহারুলের ওপর চরম ক্ষুব্ধ। এ দিকে কয়েক মাস আগে তারিফের একটি স্মার্টফোন চুরি হয়েছিল।

চুরির চার মাস পর এক মেয়ে তারিফকে ডেকে ফোনটি ফেরত দেয়। তারিফ ওই মেয়ের কাছ থেকে জানতে পারেন ফোনটি মো. ইলিয়াছ (১৯) নামের একজন ওই মেয়েকে দিয়েছিলেন। ইলিয়াছ এবং ওই মেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সূত্রে ইলিয়াছ মেয়েটিকে উপহার হিসেবে ফোনটি দিয়েছিলেন। তবে মেয়েটি পরে জেনে যায় ওই ফোনটি চুরি করে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে ইলিয়াছের সঙ্গে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেয়। ফোন ফেরত দেওয়ার পর থেকেই তারিফের প্রতি ক্ষুব্ধ হয় ওঠেন ইলিয়াছ। মাজহারুল তাঁর ছোট ভাই খুন হওয়ার পেছনে উল্লিখিত দুটি ঘটনাকে দায়ী করেন।

পুলিশ জানায়, হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ বাচ্চু মেম্বারের ভাতিজা বাবুল মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার পর বাবুল বোরকা পরে গ্রাম থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। এ ছাড়া রক্তমাখা কাপড় নিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন শাহীন মিয়া (২২) নামের এক যুবক। শাহীন ইলিয়াছের পরিচিত। নিহত তারিফের পরিবারের ধারণা, তারিফকে খুন করার জন্য শাহীনসহ কয়েক জনকে ভাড়া করে চরভেলামারী গ্রামে আনা হয়েছে।

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম মিয়া বলেন, কলেজছাত্র হত্যার ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন খুনিদের ধরার জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।