স্ত্রীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করলেন তিনি

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

রাজধানীর পল্লবীতে হোসনে আরা (২৫) নামের এক নারীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন তাঁর স্বামী। তাঁর নাম গোলাম মোস্তফা (২৬)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খোকন চন্দ্র দেবনাথ আজ রোববার প্রথম আলোকে বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে হোসনকে আরাকে হত্যা করেছে তাঁর স্বামী মোস্তফা। আদালতের কাছে হত্যা করার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মোস্তফা।

২৩ মে শাহ আলী এলাকায় আসামি গোলাম মোস্তফার ভাড়া করা বাসা থেকে হোসনে আরার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় হোসনে আরার বাবা মুসলিম মিয়া বাদী হয়ে শাহ আলী থানায় হত্যা মামলা করেন।

হোসনে আরা কেন খুন হন
ছয় বছর আগে গোলাম মোস্তফার সঙ্গে হোসনে আরার বিয়ে হয়। এই দম্পতির চার বছর বয়সী একটা ছেলে আছে। প্রেম করেই হোসনে আরাকে বিয়ে করেন মোস্তফা। মোস্তফার এটা ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। হোসনে আরার প্রথম।

হোসনে আরার ভাই বাবুল মিয়া আজ প্রথম আলোকে বলেন, গোলাম মোস্তফা যে আগে বিয়ে করেছিলেন, সে কথা তাঁর বোনের কাছে গোপন করেছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর থেকে তাঁর বোনকে মারধর করতেন মোস্তফা। ঘটনার তিন মাস আগে হোসনে আরা তাঁর স্বামীর বাসা থেকে তাঁদের (বাবার বাড়ি) বাসায় চলে আসেন।

হোসনে আরার বাবা মামলার এজাহারে বলেছেন, তাঁর মেয়ে তিন মাস ধরে তাঁদের কাছে এসে থাকতেন। গুলশানের একটি বাসায় রান্নাবান্নার কাজ করতেন। কিন্তু মেয়ের জামাই গোলাম মোস্তফা তাঁর মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করতেন। তাঁর (মোস্তফা) সংসারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাতেন। কিন্তু হোসনে আরা ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় তাঁর বাসায় মোস্তফা আসতেন। নানা কারণ দেখিয়ে হোসনে আরার সঙ্গে ঝগড়া করতেন। একাধিকবার আপস করতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত কোনো আপস হয়নি। ২৩ মে তাঁর মেয়ে হোসনে আরা কাজের উদ্দেশ্যে গুলশানে যান। সেখান থেকে হোসনে আরাকে মিরপুরের কাছের শাহ আলীতে নিজের ভাড়া করা বাসায় নিয়ে যান গোলাম মোস্তফা।

হোসনে আরার বাবা মুসলিম মিয়া মামলায় বলেন, হোসনে আরাকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার পর তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে গামছা দিয়ে হোসনে আরার হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা চালান মোস্তফা। কিন্তু শ্বাসরোধে হত্যা করতে না পেরে ধারালো ব্লেড দিয়ে জবাই করে হোসনে আরাকে হত্যা করা হয়। হত্যা করার পর মোস্তফা ঘর থেকে বেরিয়ে এসে চিৎকার করে হোসনে আরাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন।

হোসনে আরার ভাই বাবুল মিয়া আজ প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের পর থেকে তাঁর বোন হোসনে আরাকে নির্যাতন করে আসছিলেন মোস্তফা। বাধ্য হয়ে তাঁরা হোসনে আরাকে নিজেদের বাসায় এনে রাখেন। মোস্তফা কৌশলে নিজের ভাড়া করা বাসায় নিয়ে তাঁর বোনকে হত্যা করেছেন।

মোস্তফার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন হোসনে আরার ভাই বাবুল মিয়া।