উপবৃত্তি তুলতে পারছে না শিক্ষার্থীরা

টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার প্রতিবাদে এজেন্টদের বিক্ষোভ। গতকাল ভোলায় স্টেডিয়াম সড়কে। ছবি: প্রথম আলো
টাকা নিয়ে উধাও হওয়ার প্রতিবাদে এজেন্টদের বিক্ষোভ। গতকাল ভোলায় স্টেডিয়াম সড়কে। ছবি: প্রথম আলো

ভোলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তির টাকা ওঠাতে পারছে না। রূপালী ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা শিওরক্যাশের ভোলা জেলা পরিবেশক বিভিন্ন উপজেলার ৬০ জন এজেন্টের টাকা নিয়ে আত্মগোপন করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জেলার আট শতাধিক শিওরক্যাশ এজেন্টের সব লেনদেন বন্ধ হয়ে আছে। এ ঘটনায় ভোলা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ভাষ্য, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া উপবৃত্তির (প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা) টাকা প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থীর মুঠোফোনে ঢুকেছে। ২১ মে থেকে ওই টাকা শিক্ষার্থীরা শিওরক্যাশ এজেন্টদের কাছ থেকে তুলতে থাকে। কিন্তু ২৩ মে সকাল থেকে আর টাকা তোলা যাচ্ছে না। এখনো দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী টাকা তুলতে পারেনি।

এ বিষয়ে গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা মিলনায়তনে শিওরক্যাশের বরিশাল আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক ও ভোলার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (টেরিটরি ম্যানেজার) মো. নোমান এজেন্টদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা মতবিনিময় করেন। সেখানে অন্তত ৬০ জন এজেন্ট উপস্থিত ছিলেন। সমস্যার কোনো সমাধান না হওয়ায় এ সময় এজেন্টরা বিক্ষোভ করেন।

এ সম্পর্কে ওমর ফারুক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় তাঁরা ভোলা সদর থানায় একটি ডিজি করেছেন। সমস্যা সমাধানে কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। এ ছাড়া যাঁদের টাকা ক্যাশ করতে পারছেন না, তাঁরা ভোলার মহাজনপট্টি রূপালী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপককে ই-মানি ট্রান্সফার করলে ক্যাশ করতে পারবেন। আশা করছেন, বাকি সমস্যাও দ্রুত দূর হবে।

ক্ষুব্ধ এজেন্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভোলায় শিওরক্যাশের জেলা পরিবেশক মো. সোহেল। তাঁর বাড়ি সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে। ২৩ মে সকালে তাঁরা সোহেলের অ্যাকাউন্ট নম্বরে টাকা (ই-মানি) জমা দিয়েছেন। সোহেল তাঁদের বলেছিলেন, তিনি ক্যাশ করে বিকেলের মধ্যে টাকা পৌঁছে দেবেন। কিন্তু তিনি ব্যাংক থেকে টাকা তুললেও এজেন্টদের কোনো টাকা দেননি।

এজেন্টরা জানান, ২১ থেকে ২৩ মে দৌলতখানের এসহাক মোড়ের জাকির হোসেনের ৬০ হাজার টাকা, দৌলতখান বাজারের নবীন ডাক্তারের ৭০ হাজার, আল-আমিনের ৬০ হাজার, দক্ষিণ মাথার সুমাইয়া স্টোরের ৪২ হাজার, বাংলাবাজারের রফিকুল ইসলামের ১ লাখ ২০ হাজার টাকাসহ মোট ৩৪ লাখ টাকা সোহেলের মুঠোফোনে পাঠানো হয়েছে। সোহেল ২৩ মে দুপুরের মধ্যে ওই টাকা ক্যাশ করলেও এজেন্টদের মধ্যে বিতরণ করেননি। তিনি মুঠোফোন বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছেন। দৌলতখানের মিজির বাজারের হাওলাদার স্টোরের মালিক হাসনাইন আহমেদ বলেন, তাঁর মুঠোফোনে এক লাখ টাকা জমে আছে। ওই টাকা তিনি ক্যাশ করতে পারছেন না।

এ সম্পর্কে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’