ইট বিছিয়েই দেড় বছর পার

যশোর-খুলনা মহাসড়কের শহরের মণিহার থেকে মুড়লী পর্যন্ত এলাকার বেহাল দশা। গত সোমবার তোলা।  প্রথম আলো
যশোর-খুলনা মহাসড়কের শহরের মণিহার থেকে মুড়লী পর্যন্ত এলাকার বেহাল দশা। গত সোমবার তোলা। প্রথম আলো

সরেজমিনে দেখা গেছে, যশোর শহরের মনিহার প্রেক্ষাগৃহ এলাকার ফলপট্টি ও বকচর এলাকার র‌্যাব কার্যালয়ের সামনে অন্তত দেড় কিলোমিটারজুড়ে বিটুমিনের সড়কের ওপরে ইটের বিছানা বসানো রয়েছে। ওই বিছানাও টেকেনি। মাঝেমধ্যে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই এলাকা দিয়ে যানবহন চলাচল করছে হেলেদুলে। সব সময় ধুলায় আচ্ছন্ন থাকছে গোটা এলাকা। এ কারণে স্থানীয় বাসিন্দা, পথচারী ও যানবহনের যাত্রী—সবাইকেই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।

সড়কের দুই পাশ দখল করে ব্যবসায়ীরা পুরোনো বাস-ট্রাক ভাঙচুর ও যানবহনের নতুন কাঠামো তৈরির কাজ করেন। এ ছাড়া সড়কের ওপরে সারি সারি ট্রাক পার্ক করে রাখা হচ্ছে। এতে সড়কটি ছোট হয়ে মানুষের চলাচলে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে মনিহার বকচর এলাকায় শত শত যানবহনের জট লেগেই থাকছে।

ফলপট্টি এলাকার দোকানি মো. জুবায়ের বলেন, ‘এ এলাকার রাস্তা টিকছে না। রাস্তা খুঁড়ে মেরামত করার ছয় মাসের মধ্যেই পিচ উঠে বড় বড় গর্ত হয়। এরপর ইট বিছিয়ে ওই রাস্তা সংস্কার করা হয়। এ রাস্তার পানি বের হওয়ার জন্য কোনো ড্রেনের ব্যবস্থা নেই। এ কারণে বৃষ্টির সময় পানি রাস্তার পাশে আটকে থাকে। এ জন্য পিচ নষ্ট হয়ে যায়। এখন তো ধুলায় আমরা দোকানে বসতেই পারি না।’

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে পালবাড়ি-দড়াটানা-মনিহার-মুড়লি মহাসড়ক পুনর্নির্মাণের জন্য পৌনে সাত কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করে যশোর শহরের মঈনউদ্দীন বাঁশি নামের একজন ঠিকাদারকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালে কাজ বুঝিয়ে দেয়।

স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার বছরখানেকের মধ্যেই ওই সড়কের মনিহার থেকে বকচর পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার অংশে সড়কের মাঝখান ফুলে-ফেঁপে বড় ঢিবি হয়ে যায়। কিছুদিন পরে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। ঢিবিতে যানবাহনের নিচের অংশ আটকে যায়। ঘটতে থাকে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সওজ বিভাগ থেকে ওই রাস্তার মাটি পরীক্ষা করা হয়। এ রাস্তা দিয়ে খুলনা, ঢাকা, কুষ্টিয়াসহ আঞ্চলিক পথের বাস-ট্রাক চলাচল করে। এ ছাড়া নওয়াপাড়া বন্দরের সারবোঝাই ট্রাকও এ সড়ক দিয়ে যায় উত্তর বঙ্গে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সওজ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘মহাসড়কের ওই অংশের মাটি পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ওই অংশের মাটি খারাপ। সড়কের বেজমেন্টও খুব দুর্বল। যে কারণে ওই অংশটি টিকছে না। তবে ইট বিছিয়ে দেওয়ার পর থেকে যানবহন আটকে থাকার মতো খারাপ অবস্থা আর হয়নি।’

তিনি বলেন, আশা কথা হচ্ছে, ওই মহাসড়কের মনিহার থেকে মুড়লি মোড় পর্যন্ত পৌনে তিন কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করার জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ওই প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশন ঘুরে একনেকের বৈঠকে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছে। মহাসড়কের ওই অংশটুকু চার লেনে উন্নীত হলে ব্যস্ততম ওই সড়কের যানজট সমস্যা নিরসন হবে। মানুষের ভোগান্তিও কমবে।

ওই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হোক। এতে যশোর শহরের মনিহার অংশের যানজট আর থাকবে না। চলাচলে মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসবে।