সরকারের ভর্তুকি কৃষকের বিমাসুবিধা বাড়াবে

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন। পাশে আইডিআরএর সদস্য মোশাররফ হোসেন। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে।  ছবি: প্রথম আলো
গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন। পাশে আইডিআরএর সদস্য মোশাররফ হোসেন। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো

প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বন্যায় বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের একটা বড় অংশই কৃষক। তাঁদের বিমাসুবিধার আওতায় আনতে পারলে এই দুর্যোগের ঝুঁকি কমে আসবে। তবে কৃষকের পক্ষে বিমার কিস্তি (প্রিমিয়াম) দেওয়া সম্ভব নয়। তাই দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম থেকে বিমার কিস্তি পরিশোধে কিছুটা বরাদ্দ রাখা যেতে পারে। বেসরকারি সংস্থা ও ব্যবসায়ীরাও এগিয়ে আসতে পারে।

গতকাল রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সিএ ভবনে ‘দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবিলায় বিমা বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব পরামর্শ এসেছে। এতে অংশ নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থার কর্মী, বিশেষজ্ঞ ও ভুক্তভোগীরা। অক্সফামের সহায়তায় প্রথম আলো এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম।

বৈঠকের শুরুতে অক্সফামের জ্যেষ্ঠ কর্মসূচি কর্মকর্তা কাজী এন এম এন আজম সিরাজগঞ্জ ও গাইবান্ধায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া বিমাসুবিধার চিত্র তুলে ধরেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, দেশে মোট জনগোষ্ঠীর তিন ভাগের দুই ভাগই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকে। সবচেয়ে বড় দুর্যোগ বন্যায় গ্রামীণ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এত দিন মন্ত্রণালয় কাবিখা, কাবিটা দিত। এখন এর বদলে গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। এ বছর ১১ হাজার ঘর নির্মাণ করা হবে। দুর্যোগের শিকার ব্যক্তিদের বিমার আওতায় আনার জন্য সরকারি সহায়তা দরকার। যেসব বেসরকারি সংস্থা খাদ্যসহ নানা উপকরণ দিয়ে সহায়তা করত, তারাও বিমায় সহায়তা করতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন বলেন, একসময় বলা হতো যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে বন্যা হলে ইনস্যুরেন্স কোম্পানি দেউলিয়া হয়। আর বাংলাদেশে বন্যা হলে কৃষক দেউলিয়া হয়। বন্যার দুর্যোগ মোকাবিলায় অনেক এগিয়েছে দেশ। তবে সারা দেশের কৃষকদের বিমাসুবিধার আওতায় আনতে পারলে বড় কাজ হবে।

ইনস্যুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলেটরি অথরিটির সদস্য মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় বিমা ব্যবস্থা খুবই ভালো চিন্তা। এতে সরকার ভর্তুকি দিতে পারে।

প্রগতি ইনস্যুরেন্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, ২০১৩ সাল থেকে কৃষকদের বিমা চালু করেছেন তাঁরা। বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় হয়তো তিন-চার বছর পাইলট প্রকল্প হিসেবে চালু রাখা যাবে। সরকার এতে যুক্ত হলে এবং সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে তা বেশি কার্যকর হবে।