বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কিনছেন ইউএনও

এক কৃষকের বাড়িতে ধান কিনছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। ইসলামপুর, রাঙ্গুনিয়া, ২৭ মে। ছবি: প্রথম আলো
এক কৃষকের বাড়িতে ধান কিনছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। ইসলামপুর, রাঙ্গুনিয়া, ২৭ মে। ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদুর রহমান। সরাসরি গ্রাম ঘুরে সরকারি মূল্যে ধান কেনার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

আজ সোমবার প্রথম দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার ইসলামপুর ও লালা নগর ইউনিয়নে গিয়ে ধান কেনেন মাসুদুর রহমান। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দুই ইউনিয়ন থেকে ৬ টন ধান কেনা হয়। তবে কয়েকজন কৃষকের ধানে কিছুটা আর্দ্রতা থাকায় শুকিয়ে কাল মঙ্গলবার উপজেলা খাদ্যগুদামে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

লালা নগর ইউনিয়নের বাদশা মিয়া বলেন, ‘ইউএনও স্যার ঘরে এসে ধান কেনার কারণে আমাদের দুর্ভোগ কমেছে। ধান গুদামে নিয়ে বিক্রি করলে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হতো।’ সরকারের নির্ধারিত মূল্যে তিনি ধানের দাম পাচ্ছেন। ধানের এমন মূল্য পেলে কৃষকেরা উপকৃত হবেন বলে তিনি জানান।

একই গ্রামের কৃষক আবদুল সবুর বলেন, ‘ধানে কিছুটা আর্দ্রতা থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে ধান নেয়নি। ধান শুকিয়ে খাদ্যগুদামে কৃষি কার্ডসহ নিতে বলা হয়েছে।’ আগে গুদামে কখনো ধান বিক্রির সুযোগ পাননি। তাঁর ভাষ্য, এবার তিনি ধানের ন্যায্যমূল্য পাবেন।

ইসলামপুর ইউনিয়নের কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, তিনি তাঁর বাড়িতেই ২৬ টাকা কেজি দরে ৩ টন ধান বিক্রি করেছেন। বাজারে প্রতি মণ ধান ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রির কারণে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বাড়িতে এসে ১ হাজার ৪০ টাকা মণে ধান কিনছে সরকার। এই দামে ধান কিনলে কৃষকেরা লাভবান হবেন। কৃষকদেরও দুর্ভোগ কমবে।

ধান কেনা শেষে ইউএনও মো. মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী কৃষি কার্ডধারী কৃষকের বাইরে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। কোনো প্রকার দালালের কাছে না গিয়ে সরাসরি আমার অফিসে কিংবা খাদ্যগুদামে এসে মানসম্মত ধান বিক্রি করতে পারবেন কৃষকেরা। ধান বিক্রি করার জন্য যে কেউ আমার অফিসে আসতে পারেন। মানসম্মত ধান ২৬ টাকা কেজি দরে কেনা হচ্ছে।’

উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান ভূঞা বলেন, ‘ধান নিয়ে কৃষকদের সরাসরি খাদ্যগুদামে আসার জন্য প্রচারপত্র বিলি করা হয়েছে, মাইকিং করেছেন। প্রকৃত কৃষক যাতে ধান-চাল দিতে পারেন, সে জন্য কৃষি কার্যালয় থেকে তালিকা নেওয়া হয়েছে। ধান গুদামে এনে যাতে আবার বাড়িতে ফেরত নিতে না হয়, সে জন্য ধানের আর্দ্রতার মাত্রা ও অন্যান্য গুণমান সম্পর্কে কৃষকদের আগে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। ধান সংগ্রহের এই কার্যক্রম আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।

খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও জানান, এ উপজেলা থেকে এবার ৩৬ টাকা কেজি দরে ৩ হাজার ১৮৫ মেট্রিক টন চাল ও ২৬ টাকা কেজি দরে ২২০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধান-চাল উভয়ের সর্বোচ্চ আর্দ্রতা ১৪ শতাংশের মধ্যে থাকতে হবে। ২২ মে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা কার্যক্রম শুরু হয়।