রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরলেন গণপূর্তমন্ত্রী

শ ম রেজাউল করিম। ফাইল ছবি
শ ম রেজাউল করিম। ফাইল ছবি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সোমবার কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত ইউএন-হ্যাবিটাট অ্যাসেম্বলির একটি সেশনে তিনি এ অবস্থান তুলে ধরেন।

রেজাউল করিম বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বর গণহত্যার কথা বাংলাদেশ ভুলে যায়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালের সেই দিনগুলোর কথা সব সময় স্মরণ করেন। তাই যখন মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর বর্বরোচিত গণহত্যা শুরু করল, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক অনুভূতি থেকে সীমান্ত খুলে দিলেন এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের প্রবেশ করতে দিলেন। যদি সরকার সীমান্ত না খুলে দিত, তাহলে অধিকাংশ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হতো।

এর আগে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী রেজাউল করিম ইউএন-হ্যাবিটাট অ্যাসেম্বলির উদ্বোধনী অধিবেশনে যোগ দেন। ওই অধিবেশন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াত্তা।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের অনুভূতি থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে শরণার্থী হিসেবে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছেন। তখন থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসুবিধাসহ অন্যান্য সব সুবিধা দিয়ে আসছে। তবে সীমিত সম্পদ ও সাধ্যের কারণে এটা বাংলাদেশের জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও সরকার মিয়ানমারের শরণার্থী জনসাধারণের জন্য স্বাস্থ্য, পুষ্টি, আশ্রয়, স্যানিটেশনসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করছে।

রেজাউল করিম বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন উপলক্ষে এগিয়ে এসেছে, তাদের সহানুভূতি প্রকাশ করেছে। মাঝে মাঝে তারা কিছু সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে, কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিয়ানমার সরকার এবং বাংলাদেশের একাধিক সভায় রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখনো মিয়ানমার তার দেশের একজন নাগরিককেও ফিরিয়ে নেয়নি।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের পাশে দাঁড়াবে। একটি দেশের সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যেতে পারে না। একটি নৃগোষ্ঠীকে নিধন করার জন্য এই আধুনিক বিশ্বে গণহত্যা চলমান থাকতে পারে না।’

কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে ২৭ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পাঁচ দিনব্যাপী ইউএন-হ্যাবিটাট অ্যাসেম্বলির প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অধিবেশনে বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্রের সরকারি, বেসরকারি সংস্থা ও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।