বিষ পান করে থানায় হাজির গৃহবধূ

বিষ পান করে প্রায় আট কিলোমিটার হেঁটে ও ভ্যানে করে থানায় গিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন বিউটি খাতুন (৩৩)। এ সময় তাঁর মুখ থেকে বিষের গন্ধ পেয়ে পুলিশ দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায় তাঁকে। তাৎক্ষণিক চিকিৎসায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। গতকাল সোমবার রাতে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় এ ঘটনায় বিউটির ছেলে আবদুল বারিককে (১৪) আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকার লোকজনের ভাষ্য, পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিউটি খাতুনের সঙ্গে ছেলেসহ পরিবারের অন্যদের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। গত রোববার তিনি পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে থানায় মৌখিক অভিযোগ দেন। পুলিশ ওই দিনই ঘটনাস্থলে গেলেও অভিযোগের সত্যতা পাননি। উল্টো পরিবারের লোকজন বিউটি খাতুনের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দেন। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে সমঝোতার জন্য আগামী ১ জুন বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গতকাল রাতে বিউটি খাতুন আগের দিনের ঘটনার জের ধরে তাঁর ছেলে ভবানীগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র আবদুল বারিকের সঙ্গে ঝগড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি ঘরে ঢুকে বিষ পান করেন। পরে বাড়ি থেকে কিছু দূর হেঁটে এসে একটি অটোভ্যান নিয়ে তিনি বাগমারায় থানায় আসেন। রাত আটটার দিকে থানায় পৌঁছে ছেলের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দেন।

এ সময় পুলিশ তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলতে গিয়ে মুখ ও শরীর থেকে বিষের গন্ধ পায়। এতে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তাঁকে পুলিশভ্যানে করে দ্রুত স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিউটি খাতুন সামান্য পরিমাণ বিষ পান করেছিলেন। এ জন্য বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি। এখন তিনি শঙ্কামুক্ত।

এ ব্যাপারে পরিবারের লোকজন বলেন, ছেলে ও পরিবারের অন্যদের শায়েস্তা করতে বিষ পান করেন বিউটি। তাঁর কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় ছেলে ও স্বামীর প্রতি ক্ষুব্ধ তিনি। বিউটি খাতুন অসুস্থ থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নিয়ামুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গৃহবধূ কেন এমন কাজ করলেন, তা বোধগম্য নয়। তাঁর স্বামী, সন্তান ও প্রতিবেশীরা উল্টো তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এই ঘটনায় বিউটি খাতুনের ছেলে আবদুল বারিককে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। বিষ পান করে থানায় এসে তিনি পুলিশকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছেন।