বাল্যবিবাহের ঘটনায় বরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাল্যবিবাহ। প্রতীকী ছবি
বাল্যবিবাহ। প্রতীকী ছবি

বাল্যবিবাহের ঘটনায় বরসহ সাতজনকে আসামি করে সাতক্ষীরার মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজমুন নাহার মামলা করেছেন। গতকাল সোমবার রাতে সাতক্ষীরা সদর থানায় তিনি এ মামলা করেন। পুলিশ বাল্যবিবাহের শিকার কনেকে (১৪) উদ্ধার করে সাতক্ষীরা কারাগারের নিরাপদ হেফাজতে পাঠিয়েছে। 

বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে সাতক্ষীরায় এটি প্রথম মামলা বলে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান।

মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা উপপরিচালক নাজমুন নাহার মামলায় উল্লেখ করেছেন, গত রোববার রাত ১১টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের নাথপাড়ার মোসলেম আলীর ছেলে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের সম্মান প্রথম বর্ষের ছাত্র ইমরান হোসেনের (১৯) সঙ্গে পাশের গ্রামের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর ৭০ হাজার টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয়। এটি বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ২০১৭ সালের ৭, ৮, ৯ ও ১১ ধারাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ধারায় অপরাধ বলে সংঘটিত হয়েছে।

মামলায় আসামি করা হয়েছে মেয়ের বাবা, কনের গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম, মিজানুর রহমান, বর ইমরান হোসেন, বরের বাবা মোসলেম আলী, নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা রেজাউল করিম, আলীপুর ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো.আবদুল্লাহসহ সাতজনকে।

সাতক্ষীরার মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের সাতক্ষীরার উপপরিচালক নাজমুন নাহার জানান, বিষয়টি জানার পর সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক রশিদুজ্জামান, ওসিসির প্রোগ্রাম কর্মকর্তা আবদুল হাই সিদ্দিক, বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর ন্যাশনাল চিলড্রেন টাস্কফোর্সের সভাপতি পূজা দাস, সাতক্ষীরা জেলা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির প্রশাসনিক প্রধান সাকিবুর রহমান, সমাজকর্মী মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে গতকাল দুপুরে তাঁরা কনেদের বাড়ি যান। সেখানে সবার উপস্থিতিতে কনে তার বিয়ের বিবরণ দেয়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর থানায় নিয়ে আসে।

তবে কনে প্রথম আলোর কাছে বিয়ের কথা অস্বীকার করেছে। আজ থানায় এ প্রতিবেদককে সে জানায়, তার বিয়ে রোববার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হয়নি। তবে ভয়ে সোমবার সবার সামনে বিয়ে হয়েছিল বলে স্বীকার করে।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে উপপরিচালক নাজমুন নাহার সাতজনকে আসামি করে গতকাল রাতে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ রাতেই আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালায়। কিন্তু কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছেন। কনেকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা কারাগারের নিরাপদ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।