ত্রিভুজ প্রেমের বলি কিশোর রাসেল

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

নওগাঁ সদর উপজেলায় স্কুলছাত্র রাসেল আহমেদকে (১৬) হত্যার তিন দিন পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে নওগাঁ সদর থানা-পুলিশ। আজ মঙ্গলবার নওগাঁর অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ত্রিভুজ প্রেমের কারণে রাসেলকে কুপিয়ে হত্যা করে তার এক সহপাঠীসহ তিনজন। হত্যার পর তারা বিলের ধান খেতে রাসেলের লাশ ফেলে যায়।

স্বীকারোক্তি দেওয়া তিনজনের মধ্যে দুজন ১৭ বছর বয়সী কিশোর এবং অপরজনের নাম আবদুল মজিদ ওরফে শিলন (২৫)। রাসেল ও তার ওই সহপাঠী নবম শ্রেণির ছাত্র। এ ছাড়া রাসেলের সহপাঠীর সহযোগী অপর কিশোর দশম শ্রেণির ছাত্র।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নওগাঁ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আনাম বলেন, নিহত স্কুলছাত্র রাসেল সদর উপজেলায় মামার বাড়ি থেকে পড়াশোনা করত। বিদ্যালয়ের এক মেয়ের সঙ্গে রাসেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেয়েটিকে রাসেলের সহপাঠীও পছন্দ করত। এ নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ওই মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য ওই সহপাঠী একাধিকবার রাসেলকে হুমকিও দিয়েছিল। গত শুক্রবার রাত আটটার দিকে ফোন করে ওই সহপাঠীর সহযোগী আবদুল মজিদ রাসেলকে শৈলকুপা বিলে ডেকে নেন। ফোন পেয়ে রাসেল বিলের মধ্যে অবস্থিত সেতুর কাছে গেলে ওই সহপাঠীর সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রথমে ওই সহপাঠী হাসুয়া দিয়ে রাসেলের পিঠে কোপ দেয়। পরে তারা তিনজন মিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রাসেলকে হত্যা করে। হত্যার পর তারা রাসেলের লাশ বিলের মধ্যে ধান খেতে ফেলে যায়।

এসআই আনাম বলেন, আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুরের টঙ্গীতে কিশোর সংশোধনাগারে নেওয়া হয়। অপর আসামি আবদুল মজিদকে নওগাঁ কারাগারে নেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী বলেন, তিনজন আসামি গ্রেপ্তার ও তাঁদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার মধ্য দিয়ে এখন এই মামলার প্রায় সব রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। খুব শিগগিরই আদালতে এই মামলার অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।

গত শুক্রবার নিহত স্কুলছাত্র রাসেলের লাশ সদর উপজেলার শৈলকুপা বিল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রাসেলের বাবা নওগাঁ শহরের মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নওগাঁ সদর থানায় মামলা করেন। এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গতকাল সোমবার রাতে প্রথমে রাসেলের ওই সহপাঠীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ী অপর দুই আসামি ওই রাতেই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।