ন্যায়নিষ্ঠ থাকলে খালেদা জিয়া কারাগারে যেতেন না: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ন্যায়নিষ্ঠ থাকলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যেতেন না।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন সেমিনার হলে ‘হাসুমণির পাঠশালা’ আয়োজিত ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, বাংলাদেশের পুনর্জাগরণ’ গোলটেবিল আলোচনায় তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সাম্প্রতিক মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা বলেছেন, অন্যায়ের সঙ্গে আপস করলে খালেদা জিয়া কারাগারে থাকতেন না। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো, তিনি যদি ন্যায়নিষ্ঠ থাকতেন, অন্যায় যদি না করতেন, তাহলে কারাগারে যেতেন না। ন্যায়নিষ্ঠ ছিলেন না বিধায় খালেদা জিয়া আজকে কারাগারে আছেন। তিনি এতিমের টাকা আত্মসাৎ না করলে তো তাঁর বিরুদ্ধে মামলাই হতো না।’
১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনকে এ দেশের পুনর্জন্মস্বরূপ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, পাকিস্তান সে জন্য আফসোস করে। ভারতের নেতারা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘের মহাসচিব, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান অর্থনীতিবিদ তাঁর প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, এটি একটি উদাহরণ। বিশ্বগণমাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে নিবন্ধ লেখা হয়।
শুধু বিএনপি নেতারা এবং জ্ঞানী বলে পরিচিত কয়েকজন এগুলোর কিছুই দেখতে পান না উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম, ‘রিজভীর বক্তব্যে শুনতে পান যে দেশের কিছুই হয়নি। সমস্ত পৃথিবী প্রশংসা করছে, কিন্তু তাঁরা প্রশংসা করতে পারছেন না। আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাঁরা যখন ক্ষমতা ছিলেন, তাঁরা করতে পারেননি কেন? দেশের অগ্রগতিকে তাঁরা পরিণত করেছিলেন ঘূর্ণমান চাকায় আর শেখ হাসিনা সেই চাকাকে নেতৃত্ব ও কর্মনিষ্ঠা দিয়ে ধাবমান চাকায় রূপান্তরিত করেছেন। দেশের উন্নয়ন আজ ধাবমান গতিতে এগিয়ে চলেছে।’
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, কোনো পরীক্ষায় পাস না করলেও দুর্নীতিতে ছিল ফার্স্ট’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সময় দেশ দুর্নীতিতে চারবার এককভাবে চ্যাম্পিয়ন, একবার যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন আফ্রিকার একটি দেশের সঙ্গে। শুধুমাত্র দুর্নীতি নয়, দুঃশাসন ও সমান্তরাল সরকারব্যবস্থা চালু করেছিল তারা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি সরকার পরিচালিত হতো, আর একটি হাওয়া ভবন থেকে পরিচালিত হতো। হাওয়া ভবন ছিল দুর্নীতি আর কমিশনের জন্য, আর একটি ছিল খোয়াব ভবন ফুর্তি করার জন্য। এই কারণে তারা দেশকে এগিয়ে নিতে পারে নাই।’
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন ছিল মুক্তিযুদ্ধের ও গণতন্ত্রের চেতনার প্রত্যাবর্তন। তাঁর এ প্রত্যাবর্তনই এ দেশকে গণতন্ত্র আর উন্নয়নের পথ দেখিয়েছে। এই পথে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলতে সব ষড়যন্ত্র ও অন্যায়কে রুখে দিতে হবে।
হাসুমণির পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপির সভাপতিত্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান ও দৈনিক সমকাল পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক অজয় দাশগুপ্ত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টিভি বিভাগের অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম ও প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা সভায় বক্তব্য দেন।