মহাসড়ক ঘেঁষে ময়লার স্তূপ, মানুষের দুর্ভোগ

দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ এভাবেই পড়ে আছে। গতকাল সকালে দক্ষিণ সুরমার মোমিনখলা এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ এভাবেই পড়ে আছে। গতকাল সকালে দক্ষিণ সুরমার মোমিনখলা এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ঘেঁষে স্থানীয়রা প্রতিদিনই ফেলছেন ময়লা-আবর্জনা। এতে পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের উৎকট দুর্গন্ধ সহ্য করে ওই এলাকা পার হতে হয়। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের শুরুর অংশে দিনের পর দিন এমন বিশ্রী ও বেহাল পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্টরা এসব বর্জ্য অপসারণে কোনো ভূমিকাই রাখছে না। আর এটি পড়েছে সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার মোমিনখলা এলাকায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন এ মহাসড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হাজারো যানবাহন চলাচল করে থাকে। সিলেটে কাউকে ঢুকতে হলে এ মহাসড়ক দিয়েই ঢুকতে হয়। অথচ সড়কের সিলেট অংশের শুরুতেই এমন আবর্জনার ভাগাড় সিলেটের সৌন্দর্য সম্পর্কে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের বাসিন্দাদের নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দারা ছাড়াও মহাসড়কটি দিয়ে শিক্ষার্থী, দিনমজুর, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ নগরে যাতায়াত করে থাকেন। এতে প্রতিদিনই তাঁদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।

গতকাল দুপুরে দেখা গেছে, নগরের মোমিনখলা অংশে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ডান দিকে ময়লা-আবর্জনা রয়েছে। সড়ক ঘেঁষে অন্তত আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বর্জ্যের স্তূপ রয়েছে। পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল, কার্টুন, কর্কশিট, কাগজ, পলিথিন, বস্তা, ক্লিনিক্যাল বর্জ্য, উচ্ছিষ্ট খাবার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে স্তূপাকারে রয়েছে। এসব আবর্জনা গড়িয়ে পড়ছে পাশের হাওরে। এতে পরিবেশদূষণের পাশাপাশি সৌন্দর্যও বিনষ্ট হচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।

গতকাল বেলা একটার দিকে সড়কের পাশ দিয়ে নাক চেপে যাচ্ছিলেন চল্লিশোর্ধ্ব গৃহিণী হাবিবা আক্তার। তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘আমার বাসা এই এলাকাতেই। প্রতিদিনই দুর্গন্ধ সহ্য করে পথ চলতে হয়। বছরের পর বছর ধরে এমন অবস্থা চললেও এসব আবর্জনা অপসারণে সিটি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।’ আমজাদ হোসেন নামের আরেক পথচারী জানান, গুরুত্বপূর্ণ একটি মহাসড়কের পাশে আবর্জনা ফেলে এমন নোংরা একটি অবস্থা তৈরি করা হয়েছে, এটি কোনোভাবেই সহনীয় নয়। বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বর্জ্য এখানে ফেলা হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

স্থানীয় দুজন ব্যক্তি জানান, প্রতিদিন ময়লার স্তূপ পেরিয়ে আশপাশের অন্তত কয়েক হাজার বাসিন্দাকে এ সড়ক মাড়াতে হয়। দুর্গন্ধের কারণে নাকে-মুখে রুমাল দিয়ে চলাচল করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলে এসব বর্জ্য মূল সড়কেও অনেক সময় গড়িয়ে চলে আসে। পুরো সড়কটিই যেন এখন আবর্জনার ভাগাড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে ময়লা ফেলায় এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ময়লা-আবর্জনা থেকে এলাকায় জীবাণু ছড়াচ্ছে। মশা-মাছি পোকামাকড় জন্ম নিচ্ছে।

সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে ময়লা-আবর্জনা না ফেলার কারণে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের বারবার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। কিন্তু এরপরও সবাই এখানে ময়লা ফেলেন। তবে কিছুদিন পরপরই এ স্থানটি পরিচ্ছন্ন করা হয়। মাসখানেক আগেও ২০-২৫ জন শ্রমিক নিযুক্ত করে এক মাস ধরে এ স্থানটি পরিচ্ছন্ন করা হয়েছিল। আবারও মানুষজন আবর্জনা ফেলে স্থানটি নোংরা করে ফেলেছে। শিগগিরই ওই এলাকায় পুনরায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হবে। কেউ যেন এখানে ময়লা না ফেলেন, এ জন্য স্থানীয়দেরও সচেতন হওয়া উচিত।