দেবে যাওয়া কালভার্টের ঝুঁকি আড়াল করার চেষ্টা

নবনির্মিত কালভার্টের এক পাশ দেবে যাওয়ার পর এটির ওপরের অংশ সমান করে পাকা করে দেওয়া হচ্ছে।  প্রথম আলো
নবনির্মিত কালভার্টের এক পাশ দেবে যাওয়ার পর এটির ওপরের অংশ সমান করে পাকা করে দেওয়া হচ্ছে। প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা সীমান্ত এলাকায় জুড়ী-লাঠিটিলা সড়কের ওপরকার একটি বক্স কালভার্টের এক পাশ নির্মাণের কিছুদিন পরই দেবে যায়। এ সমস্যা আড়াল করতে কালভার্টের ওপরের অংশ সমান করে পাকা করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে কালভার্টটি ধসে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, জুড়ী-লাঠিটিলা সড়কের নয়াবাজার এলাকা থেকে লাঠিটিলা সীমান্ত পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার জায়গা প্রশস্ত করা ও সংস্কারের কাজ গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে শুরু হয়েছে। প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এ কাজটি পেয়েছে ঢাকার যৌথ মালিকানার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিএমপিএলকেএসএ। সড়কটি ১২ ফুট থেকে বাড়িয়ে ১৮ ফুট প্রশস্ত করা হয়েছে। এখন এটি পাকার কাজ চলছে। কাজটি চলতি বছরের আগস্টে সম্পন্ন হওয়ার কথা।

এলাকাবাসী জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের দিকে লাঠিটিলা সীমান্তে এই বক্স কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়। এর তিন থেকে চার মাস পরই কালভার্টটির এক পাশ (উত্তর দিক) দেবে যায়। ২৬ মে থেকে দেবে যাওয়া ওই অংশ সমান করে পাকা করার কাজ শুরু হয়।

সরেজমিনে গত সোমবার দুপুরে দেখা গেছে, কাছে থেকে বোঝা না গেলেও একটু দূর থেকে দেবে যাওয়ার বিষয়টি সহজেই ধরা পড়ে। দেবে যাওয়া কালভার্টের ওপর দুই পাশ সমান করে বিটুমিনমিশ্রিত পাথর ফেলা হয়েছে।

লাঠিটিলা এলাকার বাসিন্দা কলেজছাত্র খোরশেদ আলম, ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামসহ আরও চার-পাঁচজন বলেন, মূলত দেবে যাওয়ার বিষয়টি আড়াল করতেই কালভার্টের ওপরের পাটাতন ফের পাকা করা হচ্ছে। এই জুড়ী-লাঠিটিলা সড়ক ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে শোনা যাচ্ছে। তখন এটি দিয়ে মালবাহী গাড়ি চলাচল করবে। এখন সমস্যা জিইয়ে রেখে বিটুমিনমিশ্রিত পাথর দিয়ে দেবে যাওয়ার বিষয়টি আড়াল করা হলেও ভারী যান চলাচলের চাপে কালভার্টটি ধসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জুড়ী-লাঠিটিলা সড়কের গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ের সামনে পাকার কাজ তদারক করছিলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী মিন্টু সাহা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালভার্ট দেবে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তিনি কয়েক দিন হলো তিনি কাজে যোগদান করেছেন। কালভার্টের নিচের মাটি নরম। তাই এক পাশ দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সওজ অধিদপ্তরের নকশা অনুযায়ীই এ কাজ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের করার কিছু ছিল না। তবে এটা বড় কোনো সমস্যা নয় বলে তিনি দাবি করেন।

জুড়ীতে কাজের দায়িত্বে থাকা সওজ অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সহদেব সূত্রধর বলেন, লাঠিটিলা সীমান্তের যেখানে কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে মাটি খোঁড়ার সময় নিচে পাথরের বড় খণ্ড পাওয়া গেছে। মাটির অবস্থা যে খারাপ তখন সেটা বোঝা যায়নি। তবে ভবিষ্যতে কালভার্টটি ধসে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই বলে তিনি দাবি করেন।