অদম্য মেধাবী মাহাবুবা চিকিৎসক হতে চায়

মাহাবুবা খাতুন।
মাহাবুবা খাতুন।

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার মাছনা গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে মাহাবুবা খাতুন। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মধুপুর বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ার। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে লালিত স্বপ্ন পূরণ হওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছে সে।

মাহাবুবারা তিন ভাই-বোন। দুই বোন, এক ভাই। বড় বোন হাবিবা খাতুন যশোর সরকারি এম এম কলেজে গণিত বিষয়ে মাস্টার্সে পড়ছেন। ছোট ভাই আহম্মদ উল্লাহ মধুপুর বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।

মাহাবুবার বাবা রাজমিস্ত্রি। তাঁর আয় সীমিত। ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। মেয়ের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে চান তিনি। এ জন্য তিনি মেয়েকে একটি ভালো কলেজে পড়াতে চান। তবে তাঁর আয় দিয়ে সেটা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় আছে।

মাহাবুবা খাতুন বলে, ‘যত কষ্ট হোক, আমি চিকিৎসক হতে চাই। এ জন্য একটা ভালো কলেজে ভর্তি হতে চাই। প্রয়োজনে টিউশনি করব। তবুও চিকিৎসক হতে শেষ চেষ্টা করে যাব।’

বাবা আবুল হোসেন বলেন, ‘রাজমিস্ত্রির কাজ করে প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে পাই। এই টাকায় সংসার ঠিকমতো চলে না। বড় মেয়ে মাস্টার্সে পড়ছে। ছোট মেয়েটা চিকিৎসক হতে চায়। এ জন্য একটা ভালো কলেজে ওকে পড়ানো দরকার। শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হবে কিনা, জানি না।’

মা বিউটি বেগম বলেন, ‘অভাবের সংসার। মাত্র ১০ শতক জমির ওপর ভিটাবাড়ি ছাড়া আর কোনো জমি জায়গা নেই। পরের জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করে ছয় মাসের খাবার হয়। বাকি ছয় মাস কিনে খেতে হয়। তিনটি ছেলেমেয়ের পড়ালেখার ব্যয়ও অনেক। মাহাবুবা ডাক্তার হতে চায়।’

মধুপুর বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোহসীন হোসেন বলেন, ‘মাহাবুবা অত্যন্ত মেধাবী। তার আচার-আচরণও খুব ভালো। কিন্তু তার পরিবার দরিদ্র। একটু সহায়তা পেলে তার মেধার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটবে।’