ছড়ায় বাঁধ, শহরে জলাবদ্ধতা

কোদালীছড়ার ভাটিতে কাটাগাং-বাইঙ্কা খালে আটকে থাকা কচুরিপানা। সম্প্রতি অফিসের বাজার এলাকায়।  ছবি: প্রথম আলো-(KATAGANG)-5_MOULVIBAZAR
কোদালীছড়ার ভাটিতে কাটাগাং-বাইঙ্কা খালে আটকে থাকা কচুরিপানা। সম্প্রতি অফিসের বাজার এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো-(KATAGANG)-5_MOULVIBAZAR

মৌলভীবাজার শহরের পানিনিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম কোদালীছড়ার ভাটি অংশে মাছ ধরার জন্য দেওয়া বাঁশ ও চাটাইয়ের বাঁধ এবং কচুরিপানা পানিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করছে। এতে শহর ও শহরতলি এলাকায় কোদালীছড়া খনন করা হলেও সুফল মিলছে না। বৃষ্টি হলেই শহর ও শহরতলিতে তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।

গত রোববার মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর ইউনিয়নের অফিসের বাজার এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, কোদালীছড়া দিয়ে খুবই ধীরে পানি বইছে। কচুরিপানা একটু একটু করে ভাটির দিকে ভেসে যাচ্ছে। কিছু স্থানে মাছ ধরার জন্য জাল পাততে বাঁশের মাচা করা হয়েছে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, মাছ ধরার জন্য ছড়ার বিভিন্ন স্থানে বাঁশ ও চাটাই দিয়ে তৈরি ‘খাটিয়া’ নামে পরিচিত বাঁধ দেওয়া হয়েছে। কোদালীছড়ার অফিসের বাজার এলাকার পূর্ব দিক থেকে কাটাগাং-বাইঙ্কা খাল নামে আরেকটি ছড়া বেরিয়ে গেছে। সেই খালে গিয়ে দেখা গেছে, খালটির দীর্ঘ অংশ কচুরিপানায় ভরে আছে। ছইছড়া বিলের কাছে অন্তত তিনটি স্থানে বাঁশ ও চাটাইয়ের বাঁধ আছে। এই বাঁধ পানির নিচে তলিয়ে আছে। ওপরে দেখা যায় শুধু বাঁশের মাথা। সেখানে কচুরিপানা আটকে আছে। পানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বাঁধের কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। কচুরিপানা জমছে। পানি নামছে না। বাঁধ বা খাটিয়া না থাকলে ছড়ায় এভাবে কচুরিপানা জমত না।

মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য আইনে এ রকম স্থায়ী বাঁধ দিয়ে মাছ ধরা অবৈধ। এ রকম বাঁধের জন্য নগদ ৫ হাজার টাকা জরিমানা, ১ থেকে ২ বছরের কারাদণ্ড অথবা জেল-জরিমানা উভয় দণ্ডেরই বিধান আছে।

মৌলভীবাজার সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু ইউছুফ গত রোববার বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। মৎস্য আইনে এ রকম স্থায়ী বাঁধ দেওয়া অবৈধ।’

এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) মৌলভীবাজার সদর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডি সপ্তাহ দুই আগে থেকে কোদালীছড়ার কচুরিপানা পরিষ্কারের কাজ করছে। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, ‘একদিকে কচুরিপানা পরিষ্কার করছি, অন্যদিকে কচুরিপানায় ভরে যাচ্ছে ছড়া। এ ছাড়া হাসপাতালের বর্জ্যে শ্রমিকদের হাত-পা কাটছে, ঘা হচ্ছে। ওরাও তো মানুষ। একদিন কাজ করলে অসুস্থ হয়ে আরেক দিন আসে না।’

মৌলভীবাজার পৌর মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, ‘কোদালীছড়ার ভাটিতে অফিসের বাজার এলাকায় এমনভাবে বাঁশের খাঁটি (বাঁধ) দিয়ে রাখা হয়েছে যে কচুরিপানায় সয়লাব হয়ে গেছে। এলজিইডি কচুরিপানা পরিষ্কার করছে, কিন্তু তেমন একটা আগাতে পারছে না।’