সড়কে খানাখন্দ, জনদুর্ভোগ

কোটবাড়ী-কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক। গত মঙ্গলবার কোটবাড়ী পলিটেকনিক্যাল এলাকায়।  প্রথম আলো
কোটবাড়ী-কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সড়ক। গত মঙ্গলবার কোটবাড়ী পলিটেকনিক্যাল এলাকায়। প্রথম আলো

কুমিল্লার কোটবাড়ী থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ২ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। সড়কের মধ্যে অন্তত ২০টি অংশে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া মাঝারি ও ছোট গর্ত রয়েছে শতাধিক।

সাত মাস আগে ওই সড়কে ইট ও বালুর মিশ্রণ দিয়ে রোলারে সমান করা হয়। এরপর আর সড়কে কোনো ধরনের কংক্রিট ও পিচ দেওয়া হয়নি। বৃষ্টির পানি জমে ও যানবাহনের চাপে সড়কটিতে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন সড়ক হালকা যানবাহন এমনকি হেঁটে যেতেও দুর্ভোগে পড়তে হয়।

গত মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে ওই সড়কের পলিটেকনিক ও বার্ড এলাকা ঘুরে মানুষের চরম দুর্ভোগের চিত্র দেখা গেছে। সড়কটির অবস্থান কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই সড়ক দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ময়নামতি জাদুঘর, শালবন বিহার, সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বেসরকারি ব্যক্তিমালিকানাধীন পার্ক, লালমাই পাহাড়, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বিশ্ব শান্তি প্যাগোডা, শালবন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও লালমাই পাহাড়ে যাতায়াত করেন অসংখ্য পর্যটক ও শিক্ষার্থী। কিন্তু সড়কটি সংস্কার করা হচ্ছে না। এটি প্রশস্তও করা হচ্ছে না।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন উদ্দিন চিশতী বলেন, গত বছরের ২৬ জুন নগরের ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নালা নির্মাণ ও সড়ক সংস্কারের জন্য ৩৮ কোটি ১৫ লাখ ৭০ হাজার ২৬৮ টাকার কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার হক এন্টারপ্রইজ ও রাজধানীর আরএবিআরসি প্রাইভেট লিমিটেড ওই কাজ পায়। কাজ পাওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নালার কাজ করে। কোটবাড়ী থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সড়কের আগের পিচ তুলে এর মধ্যে ইটের টুকরো ও বালু ফেলে রোলার দিয়ে চাপ দেয়। গত বছরের অক্টোবরে ওই কাজ শেষ হয়। এর মধ্যে কয়েক দফা বৃষ্টি হয়েছে। পলিটেকনিক এলাকায় সড়কের প্রায় পূর্ব পাশে কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও পশ্চিম পাশে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে (বার্ড)। দুটি প্রতিষ্ঠানের সীমানাপ্রাচীর সড়ক লাগোয়া। এ কারণে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় নালা নির্মাণ করা যায়নি। সড়কের পানিও নামতে পারে না। সড়কের মধ্যে দিনের পর দিন পানি জমে ও যানবাহনের চাপে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

এই সড়কে প্রতিদিন অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালান সালমানপুর গ্রামের খোরশেদ আলম, মনির হোসেন, ইয়াছিন মিয়া, রাজন মিয়া, ফজলুল হক, মোশারফ হোসেন, মো. ওয়াসিম। তাঁরা বলেন, ‘জান বাজি রেখে গাড়ি চালাই। এটা কোনো রাস্তাই না। প্রায়ই গাড়ি উল্টে যায়। আমরা গর্তে ইট ফেলে গাড়ি তুলে আনি।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘এই রাস্তা দিয়ে যানবাহনে যাতায়াত তো দূরে থাক, হাঁটাই দায় হয়ে পড়েছে। রাস্তাটি শিগগিরই সংস্কার করা দরকার।’

কুমিল্লা নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ফজল খান বলেন, সড়কটির অবস্থা খারাপ। মানুষ এই সড়কে যাতায়াত করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শেখ মো. নূরুল্লাহ বলেন, ‘এই সড়কের নিচু অংশ আরসিসি (রেইনফোর্স সিমেন্ট কংক্রিট) করা হবে। সড়কের শালবন বৌদ্ধবিহার এলাকায় সেটি করা হবে। ওই কারণে কাজ দেরি হচ্ছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।