আমতলীতে আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষীকে কোপানোর অভিযোগ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বরগুনার আমতলী উপজেলায় ধর্ষণ মামলার আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষী দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই দুই ভাইকে স্বজনেরা ওই দিন রাতে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন।

আহত ওই দুই ভাইয়ের নাম মো. কাদের সরদার ও জাহাঙ্গীর সরদার। এ ছাড়া এ ঘটনায় দায়ী করা হচ্ছে মাহবুব ম্যালকার ও তাঁর তিন ভাই রিয়াজ ম্যালকার, আতাউল্লাহ ম্যালকার ও শহীদ ম্যালকারকে। এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাহবুবের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা রয়েছে। ওই মামলারই সাক্ষী তিন ভাই কাদের, জাহাঙ্গীর ও মঈনুদ্দিন।

স্থানীয় ও ঘটনার শিকার ওই ভাইয়ের স্বজনের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার এক গৃহবধূকে গত বছর ২৯ অক্টোবর মাহবুব ম্যালকার ধর্ষণ করেন। ওই ঘটনায় গৃহবধূ বাদী হয়ে মাহবুব ও রিয়াজের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ ওই দিনেই মাহবুবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। এরপর গত বছর ১৫ ডিসেম্বর পুলিশ এ মামলায় মাহবুবকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। আগামী ১২ জুন বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে ওই মামলার সাক্ষ্য দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে।

তবে ২০ দিন আগে উচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে বের হয়ে আসেন মাহবুব। এরপরই মাহবুব মামলার সাক্ষী জাহাঙ্গীর, কাদের ও মঈনুদ্দিনকে তাঁর বিপক্ষে সাক্ষী না দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। তবে সাক্ষীরা মাহবুবের কথায় নারাজি হয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় থাকেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহবুব ও তাঁর তিন ভাই রিয়াজ, আতাউল্লাহ ও শহীদ বুধবার বিকেলে সাক্ষী কাদের ও জাহাঙ্গীরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পা, হাত, পেটে গুরুতর জখম করেন। পরে কাদের ও জাহাঙ্গীরকে স্বজনেরা আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন।

হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুই ভাইকে বরিশাল বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবামিচ) পাঠান। এ ঘটনায় সাক্ষী দুই সহোদরের বাবা আবুল সরদার বুধবার রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার গৌরাঙ্গ হাজড়া বলেন, আহত কাদের সরদারের ডান পায়ে, রানে ও পেটে এবং জাহাঙ্গীরের ডান হাতসহ বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

আহত জাহাঙ্গীর সরদার বলেন, ‘মাহবুব ম্যালকার গত বছর ২৯ অক্টোবর আমার প্রতিবেশী এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। ওই মামলায় মাহবুব ৬ মাস কারাগারে ছিলেন। ওই মামলায় আমরা তিন ভাই সাক্ষী। জামিনে মাহবুব বাড়ি এসে সাক্ষী না দেওয়ার জন্য আমাদের চাপ দেন। তবে আমরা তাঁর কথার রাজি না হওয়ায় বড় ভাইকে আর আমাকে কুপিয়ে জখম করেছেন।’

অন্যদিকে ধর্ষণ মামলার বাদী ওই গৃহবধূ প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, ‘মাহবুব আর তাঁর ভাইয়েরা আমাকেও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তাঁদের ভয়ে আমি ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারছি না।’

আমতলী থানার ওসি মো. আবুল বাশার বলেন, এ ঘটনায় তিনি অভিযোগ পেয়েছেন এবং যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন।