পটুয়াখালীতে প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের সদস্যসহ ৪৬ জন আটক

প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করছেন পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান। পুলিশ সুপারের কার্যালয়, পটুয়াখালী, ৩১ মে। ছবি: প্রথম আলো
প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের বিষয়ে প্রেস ব্রিফিং করছেন পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান। পুলিশ সুপারের কার্যালয়, পটুয়াখালী, ৩১ মে। ছবি: প্রথম আলো

পটুয়াখালীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ৪৬ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার এই তথ্য জানানো হয়। তাঁদের মধ্যে ৩৩ জন ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের’ সঙ্গে জড়িত বলে জানানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, একজনকে অর্থদণ্ড ও প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ৩৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।

দুপুর ১২টায় পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হাফিজ। তিনি জানান, আজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার সময় শহরের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে অসদুপায় অবলম্বনের কারণে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত সাতজনকে এক মাস করে, একজনকে সাত দিন, একজনকে পাঁচ দিন, একজনকে তিন দিনের কারাদণ্ড দেন। অপরজনকে এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দুজন খাবার সরবরাহকারী (ওমেদার) নিয়ম ভঙ্গ করে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত কক্ষে প্রবেশ করায় এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

অপর দিকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পটুয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। এতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান লিখিত বক্তব্যে জানান, এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে একটি চক্র প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে তাঁদের কাছে খবর ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে নামে। এর মধ্যে শহরের ছোট চৌরাস্তা এলাকা থেকে ৫ জন, সরকারি কলেজের সামনে থেকে ১৪ জন, আবদুল করিম মৃধা কলেজের সামনে থেকে ৪ জন, সরকারি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে থেকে ৩ জন, পিটিআইর সামনে থেকে ১ জন, ওয়াজেদীয়া দাখিল মাদ্রাসার সামনে থেকে ৩ জন, চরপাড়া মাদ্রাসার সামনে থেকে ২ জন ও জুবিলী উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে থেকে ১ জনসহ মোট ৩৩ জনকে আটক করে পুলিশ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আরও জানান, এই অভিযানে পুলিশ আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে বিভিন্ন মডেলের ৪০টি মুঠোফোন, হাতে লেখা প্রশ্নপত্র-উত্তরপত্রসহ মুঠোফোনের স্ক্রিনশট জব্দ করে। এই চক্রের মূল হোতাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘সহকারী শিক্ষক-২০১৮’ নিয়োগ পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ আজ পটুয়াখালী জেলায় অনুষ্ঠিত হয়। জেলায় মোট ২২ হাজার ৩৩৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শহরের ২২টি ও দুমকি উপজেলায় দুটি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা চলে।