পিচ উঠে ধুলায় ধূসর সড়ক

সংস্কার না করায় দিন-রাত ধুলাচ্ছন্ন সড়কে ভোগান্তি নিয়ে চলছে যানবাহন ও মানুষজন। গতকাল দুপুরে রশীদ চত্বরে।  প্রথম আলো
সংস্কার না করায় দিন-রাত ধুলাচ্ছন্ন সড়কে ভোগান্তি নিয়ে চলছে যানবাহন ও মানুষজন। গতকাল দুপুরে রশীদ চত্বরে। প্রথম আলো

পিচঢালাই উঠে সড়কে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। সেই গর্ত থেকে বের হওয়া বালু ও ধুলায় ধূসর হয়ে পড়ছে পুরো এলাকা। ধুলো-বালি উড়ে গিয়ে পড়ছে আশপাশের দোকানে। সড়কের পথচারী ও স্থানীয় লোকজন পোহাচ্ছে ভোগান্তি। এমন অবস্থা সড়কপথে সিলেট শহরে প্রবেশের দ্বার দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চত্বর এলাকার বেশির ভাগ অংশ পিচঢালাইয়ের অস্তিত্ব নেই। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। চত্বর এলাকায় যানবাহন চলে হেলেদুলে। অথচ এ চত্বরটি সড়কপথে সিলেট শহরে প্রবেশের একমাত্র দ্বার। চত্বর দিয়েই ঢাকাসহ দূরপাল্লার বাস কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল কদমতলীতে প্রবেশ করে। একই চত্বর হয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উদ্দেশ্যে যানবাহন ছেড়ে যায়। চত্বরের দক্ষিণ দিকে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক, উত্তর দিকে কদমতলী বাস টার্মিনাল এবং পশ্চিম পাশ দিয়ে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক। সিলেট শহরের যানবাহন প্রবেশের মূল চৌমহনা এ চত্বরটির আধা বর্গকিলোমিটারজুড়ে ভাঙাচোরার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, চত্বর এলাকা দিয়ে দিনরাত সমানতালে চলে দূরপাল্লার বিভিন্ন বাসসহ মালবাহী ট্রাক থেকে শুরু করে অন্যান্য যানবাহন। শুকনো থাকলে ধুলায় পুরো এলাকা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকে, আবার বৃষ্টি হলে চত্বর এলাকার ছোট-বড় গর্তগুলোতে পানি জমে থাকে। জমে থাকা পানিতে যানবাহনের চাকা পড়ে অনেক সময় পথচারীদের শরীরে ময়লা পানি ছিটকে পড়ে।

আশপাশের বাসিন্দা ও পথচারীদের অভিযোগ, আশপাশের বাসিন্দারা ভাঙা সড়কের কারণে প্রায় এক বছর ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছে। সড়কের এ অংশ ভাঙা থাকায় যানবাহনের ভাড়া বেড়েছে। এ ছাড়া ধুলার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় নাক-মুখ চেপে এ পথে চলাচল করতে হয়। সড়কটি ভাঙা থাকায় যানবাহন চলাচল করতে বিলম্ব হচ্ছে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। অন্যদিকে চত্বর এলাকা সিলেটে প্রধান প্রবেশদ্বার। এ এলাকায় দূরপাল্লার যাত্রীরা সিলেট শহরে প্রবেশের পূর্বে পর্যটন এলাকা সিলেট সম্পর্কে বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হবে।

হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকার স্থানীয় ব্যবসায়ী এম রায়হান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় এক বছর ধরে ভাঙা রাস্তার কারণে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। ভাঙা সড়কের ধুলো উড়ে এসে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আস্তর জমে থাকে। প্রতিদিন ধুলা ঝাড়তে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। ধুলো–বালির জন্য দোকানে ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।

এ সড়কের তিনজন বাসচলাক ও দুজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক জানান, ধুলোর কারণে অনেক সময় সামনে কোনো যানবাহন আছে কি না, তা দেখা যায় না। এ কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। আবার কোনো কোনো সময় সড়কে পথচারীরা পারাপার হচ্ছেন কি না, তা–ও পরিষ্কারভাবে দেখা যায় না। এতে যানবাহনের চালকেরাই বেশি ঝুঁকি ও ভোগান্তির শিকার হন।

সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর প্রথম আলোকে বলেন, হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। এ চত্বরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে তিনি বলেন, শহরের প্রধান প্রবেশদ্বার বেশ কিছুদিন ধরে ভাঙা থাকার কারণে ধুলো-বালি উড়ে পথচারী ও যানবাহনের চালকেরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, হুমায়ুন রশীদ চত্বর এলাকা ঈদের আগে অস্থায়ীভাবে মেরামত করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ঈদের সময় যানবাহনের চাপ বেশি থাকবে, যার কারণে সড়কটি বন্ধ করে স্থায়ীভাবে মেরামত করা সম্ভব নয়। ঈদের পর ওই এলাকায় স্থায়ীভাবে মেরামত করা হবে।