হাতকড়া পরা আসামির সুরমায় ঝাঁপ, চার দিন পর মিলল লাশ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটে হাতকড়া পরা অবস্থায় এক আসামির সুরমা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ার চার দিন পর তাঁর লাশ পাওয়া গেছে। শনিবার সুনামগঞ্জের ছাতক এলাকায় সুরমা থেকে ওই আসামির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

নিহত ওই ব্যক্তির নাম রাজন মিয়া। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বাখরডা গ্রামে। রাজন একজন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মাদক ও চুরির মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে সোমবার রাতে কোতোয়ালি থানায় নিচ্ছিল বন্দরবাজার ফাঁড়ির পুলিশ। সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে হাতকড়া পরা তিন আসামিকে নেওয়ার সময় রাজন সুরমায় ঝাঁপ দেন। এ সময় রাজনকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পাওয়া যায়নি। ঘটনার পাঁচ দিনের মাথায় শনিবার সকালে সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমার ভাটিতে রাজনের লাশ পাওয়া যায়।

ছাতক থানা পুলিশ সূত্র জানায়, হাতকড়া পরা অবস্থায় লাশটি পাওয়ার পর সিলেট কোতোয়ালি থানা–পুলিশকে অবহিত করলে তারা লাশটি রাজনের বলে শনাক্ত করে।

সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম মিঞা শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাজন গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক ও চুরির মামলা আছে। সুরমায় ঝাঁপ দেওয়ার পরপরই কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা ইঞ্জিনচালিত নৌকার সাহায্যে নদীতে খোঁজাখুঁজি করেন। তবে নদীতে স্রোত থাকায় রাজনের কোনো সন্ধান মেলেনি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

রাজনের পরিবারের কোনো সদস্যের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর পরিচিত দুজন ব্যবসায়ী বলেন, বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশের একটি দল তাঁকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে। এ সময় রাজন নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। পুলিশ তাঁকে থানায় নেওয়ার কথা বলে হাতকড়া পরালে তিনি অপমানবোধ করেন। তাদের দাবি, এ জন্য ক্ষোভে নদীতে ঝাঁপ দেন রাজন।

তবে এ বিষয়ে ওসি সেলিম বলেন, রাজনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা ছিল। ওই রাতে হাতকড়াসহ পালানোর অভিযোগে রাজনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করা হয়। এ ছাড়া এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ এনে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্যদিকে পুরো ঘটনাটি তদন্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।