বিএনপি পাকিস্তানপন্থী একটি দল: হাছান মাহমুদ

হাছান মাহমুদ
হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ঐতিহাসিক ছয় দফা ঘোষণার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতার সূর্যোদয় হয়েছিল। এই ছয় দফার মধ্যেই বাঙালি জাতির মুক্তি নিহিত ছিল। এর ভিত্তিতেই ধাপে ধাপে ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টি এবং ৭০-এর নির্বাচনে জনগণ রায় দিয়েছিল। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সেদিন এই গণরায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বাঙালি নিধনে একটি গণহত্যার পরিকল্পনা করে। 

ঐতিহাসিক ৭ জুন উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে হাছান মাহমুদ এ বক্তব্য দেন। শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার শুরুতে ছয় দফার আন্দোলনের সৈনিক মনু মিয়া, শফিকসহ অসংখ্য শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ১৯৬৬ সালে ছয় দফা ঘোষণার অনেক আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরিকল্পনা করেছিলেন। সেই পরিকল্পনা থেকে তিনি ছয় দফা ঘোষণা এবং জনগণকে সংগঠিত করেছিলেন। এ জন্য তাঁকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল। কিন্তু বাংলার জনতার আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল।
হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তাতে তিনি প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি ধাপে ধাপে বাঙালিকে স্বাধীনতার দিকে নিয়ে যান।
তথ্যমন্ত্রী বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, ‘বিএনপি বলে তাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযোদ্ধা। অর্থাৎ তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল। তাহলে তো তাদের সঙ্গে ছয় দফা এবং ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কোনো দ্বন্দ্ব থাকার কথা নয়। আমার প্রশ্ন, বিএনপি ছয় দফা এবং ৭ মার্চ পালন করে না কেন? তারা করে না, কারণ তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না।’
বিএনপির সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ক্ষমতার উচ্ছিষ্টভোগীদের নিয়ে জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। রাস্তায় উচ্ছিষ্ট বা ময়লা ছড়ালে খাওয়ার জন্য কাকের অভাব হয় না। তেমনি রাজনীতির উচ্ছিষ্ট কাকদের নিয়ে জিয়া বিএনপি গঠন করেছিলেন। বিএনপির যাঁরা এখন সিনিয়র নেতা, তাঁরা সবাই আগে অন্য দল করতেন। যেমন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগে অন্য দল করতেন। মওদুদ আহমদও আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি হয়ে আবার বিএনপিতে ফেরত গেছেন। খন্দকার মোশাররফ ছাত্রলীগ করতেন। রুহুল কবির রিজভী ছাত্রজীবনে বাম সংগঠন করতেন। তেমনি চট্টগ্রামের বিএনপির কেউ কেউ আগে বামপন্থী দল করতেন। কেউ আবার ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন। আওয়ামী লীগে আসতে চেয়ে না পেরে বিএনপিতে গেছেন, এমপি-মন্ত্রীও হয়েছেন।’

চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম প্রমুখ।