রেলে পণ্য পরিবহন হলে সড়কে চাপ কমবে: রেলপথমন্ত্রী

নূরুল ইসলাম
নূরুল ইসলাম

রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেছেন, রেলপথে পণ্য পরিবহন করা হলে সড়কের ওপর চাপ কমবে। রেল যোগাযোগকে আরও উন্নত করার জন্য ২০৪৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা গুরুত্বপূর্ণ রেলপথগুলোতে ডাবল লাইন করছি। যাতে রেলপথেই ব্যবসায়ীরা তাঁদের পণ্য পরিবহন করতে পারেন।


আজ শনিবার দুপুরে পঞ্চগড় সরকারি মিলনায়তনে পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩–৭৪ সালেই রেলপথে ৩৫ শতাংশ মানুষ যাতায়াত করত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই রেল বিভাগকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। পরে রেল ব্যবস্থাকে প্রায় ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এত দিনে রেলপথে ডাবল লাইন নির্মাণ করা হলে সড়কের ওপর এত চাপ পড়ত না।


নূরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর আমলে রেল ব্যবস্থায় লোকবল ছিল প্রায় ৬৮ হাজার। তখন আমাদের চট্টগ্রামে নিজস্ব কারখানায় ওয়াগন তৈরি করা যেত। ১৯৮৬ সাল থেকে রেলে কোনো নিয়োগ দেওয়া হয়নি, কোনো কোচ এবং ইঞ্জিন কেনা হয়নি। বরং ১৯৯১-৯২ সালে বিএনপির আমলে রেলের ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ছাঁটাই করা হয়েছে। রেলের সক্ষমতাকে তারা ধ্বংসের মুখে নিয়ে গেছে। বর্তমান সরকার রেল সেবা বৃদ্ধির মাধ্যমে রেলের প্রতি যাত্রীদের আস্থা ফিরিয়ে এনেছে।

রেলপথমন্ত্রী বলেন, বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ব্যাপক পরিমাণে পাথর আমদানি হয়। এ পাথর দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন কয়েক শ ট্রাকে পৌঁছে দেওয়া হয়। এতে সড়কের ওপর চাপ বাড়ে। এ জন্য সড়কে চাপ কমাতে বাংলাবান্ধা থেকে রেলে পণ্য পরিবহনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আগামী এক বছরের মধ্যেই তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের কাজ শুরু হবে। এতে এ বন্দর দিয়ে ব্যবসা–বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে।
এ সময় মন্ত্রী রেলের টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে কেউ জড়িত হলে তাদের পরিচয় যে–ই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি পঞ্চগড়কে বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং ভূমিধস থেকে বাঁচাতে বোমা মেশিনে (ড্রেজার) অপরিকল্পিতভাবে ভূগর্ভস্থ পাথর উত্তোলন বন্ধের জন্যও প্রশাসনকে সজাগ থাকতে বলেন। এ সময় তিনি সরকারের ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ব্যবসায়ীদের নির্ধারিত ভ্যাট পরিশোধ করার অনুরোধ করেন। সেই সঙ্গে মন্ত্রী ব্যবসায়ীদের শুধু মুনাফা নয়, দায়িত্ববোধ বিবেচনায় নিয়ে জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামসহ পঞ্চগড়-১ আসনের সাংসদ মজাহারুল হক প্রধান, পঞ্চগড় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার সাদাত সম্রাট, পঞ্চগড় পৌরসভার মেয়র তৌহিদুল ইসলাম, বোদা পৌরসভার মেয়র ওয়াহিদুজ্জামান সুজা, পঞ্চগড় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, আটোয়ারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম, দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক চিশতী এবং বোদা উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আলম টবিকে চেম্বারের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা এবং ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

এ সময় পঞ্চগড় চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবদুল হান্নান শেখ, সিনিয়র সহসভাপতি শরিফ হোসেন, সহসভাপতি মেহেদি হাসান খান বাবলা ও শহিদুল ইসলামসহ চেম্বারের পরিচালক ও অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।