শ্রীমঙ্গলে সবুজ চা-বাগানে রঙিন ঢেউ

উঁচু–নিচু টিলা। কোথাও সমতল। সবখানেই সবুজের সমারোহ। চারপাশে শুধুই চা–বাগানের সবুজ গালিচা বিছানো। বছরের বেশির ভাগ সময় এই চা–বাগানগুলোয় সুনসান নীরবতা থাকে। কিন্তু ঈদের এই সময়ে সেই নীরবতা ভেঙেছে। এখন সবুজের ভেতর রঙের ছোঁয়া লেগেছে। রঙিন কাপড়ের দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা সবুজের ভেতর রঙিন ঢেউ তুলছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে।

গতকাল শনিবার উপজেলার বিভিন্ন চা–বাগান ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। ভানুগাছ সড়কের পাশের চা–বাগানগুলো শহরের কাছাকাছি। ফলে এখানেই সবচেয়ে বেশি পর্যটকের আগমন ঘটছে।

যশোর থেকে বেড়াতে এসেছেন ফারজানা হক। প্রথম আলোকে বলেন, ‘এর আগে কখনো আমি চা–বাগানে আসিনি। শ্রীমঙ্গলে এসে মনটা পুরাই ভরে গেছে। নীল আকাশের নিচে সবুজের এত বড় সবুজের গালিচা! তা দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারছি না। এই সবুজের রাজ্য ছেড়ে যেতে ইচ্ছা হচ্ছে না। তবু চলে যেতে হবে। কিন্তু বারবার এখানে ফিরে আসতে ইচ্ছে করবে।’

যেমনটা করেন ঢাকার তাসকিন চৌধুরী। এর আগে বেশ কয়েকবার শ্রীমঙ্গল ঘুরে গেছেন। কিন্তু এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বরাবরই তাঁকে টানে। তাই ছুটি পেলেই বারবার ছুটে আসেন। যেমনটি এসেছেন এবারের ঈদের ছুটিতে। ছুটি পেলেই ঘুরে বেড়াতে মন চায় তাসকিনের। আর বেড়ানোর কথা মনে হলেই শ্রীমঙ্গলের কথা সবার আগে মনে আসে। তাসকিন বলেন, ‘এর আগে আমি বন্ধুদের সঙ্গে কয়েকবার এসেছি। কিন্তু এবারই প্রথম পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি। পরিবারের সবাই চা–বাগান দেখে খুবই আনন্দিত হচ্ছে।’

শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার আহ্বায়ক আবু সিদ্দিক মুসা প্রথম আলোকে বলেন, দেশের অন্যান্য পর্যটন এলাকার তুলনায় শ্রীমঙ্গলের ভ্রমণ খরচ অনেক কম। এখানে চা–বাগানের পাশাপাশি অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান আছে। তা ছাড়া মৌলভীবাজারের অন্য পর্যটন স্পটগুলোয় শ্রীমঙ্গল থেকে যাওয়ার ভালো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। ফলে পর্যটকেরা শ্রীমঙ্গলকেই পছন্দের শীর্ষে রাখেন। এবারের ঈদ উপলক্ষে প্রচুর পর্যটক এখানে এসেছেন। ঈদ শেষ হলেও আরও কয়েক দিন পর্যটকদের ভিড়ে শ্রীমঙ্গল মুখরিত থাকবে বলে আশা করছেন তিনি।

মৌলভীবাজারের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ সার্কেল) মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে এখন বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঈদে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ঈদের ছুটি শেষ হলেও পর্যটকেরা নির্বিঘ্নে চা–বাগানসহ দর্শনীয় স্থানগুলোয় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ সবকিছু নজরে রাখছে।