ফোনে মারের শব্দ শোনানো সেই স্বামী কারাগারে

লালমনিরহাট শহরের সাপটানা এলাকায় যৌতুকের দুই লাখ টাকার জন্য গৃহবধূ খুরশিদা আক্তারকে পেটানো স্বামী হাসান আল হাবিবকে (২৮) গতকাল রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হাবিব লালমনিরহাটের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন জানান।

আদালত হাবিবের এ আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি লালমনিরহাট জেলা কারাগারে রয়েছেন।

লালমনিরহাট সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মৃগেন্দ্র চন্দ্র রায় এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এসআই মৃগেন্দ্র চন্দ্র রায় বলেন, এ মামলার অপর দুই আসামি হাসান আল হাবিবের দুই বোনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, হাবিবকে গ্রেপ্তারের জোরালো চেষ্টার প্রেক্ষাপটে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত ৩০ মে দুপুরে ওই গৃহবধূর স্বামী হাসান আল হাবিব নিজ বাড়িতে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে মুঠোফোনে সে শব্দ গৃহবধূর ভাইকে শোনান। ৪৭ সেকেন্ড স্থায়ী এ নির্যাতনের অডিও শুনে গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা সেদিন বিকেলে এসে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাবিবের বাড়িতে দেখতে পান। তবে হাবিবের পরিবারের বাধার মুখে গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে পারেননি তাঁরা। পরে পুলিশের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করে ওই দিন সন্ধ্যায় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। ওই গৃহবধূ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ২ জুন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে তিনি তাঁর বাবার বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় অবস্থান করছেন।

এ ঘটনায় গৃহবধূর বড় ভাই হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ৩১ মে লালমনিরহাট সদর থানায় হাবিবসহ তাঁর দুই বোনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা করেন।

এ ব্যাপারে ২ জুন প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘মাইরের শব্দ শুনবি, দেখ কেমন লাগে?’ শিরোনামে ‘যৌতুকের জন্য বোনকে মেরে মুঠোফোনে ভাইকে শোনাল ভগ্নিপতি’—উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। একই সঙ্গে নির্যাতনকারী স্বামী হাসান আল হাবিব ও মামলার বাদী গৃহবধূর ভাইয়ের মধ্যে ৪৭ সেকেন্ড স্থায়ী অডিও ক্লিপ ও হাসান আল হাবিবের ছবি প্রকাশিত হয়।