অস্ত্র মামলায় মনজুরুল হত্যার আসামি কাদেরের যাবজ্জীবন

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব) আবদুল কাদের খান। ছবি: প্রথম আলো
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব) আবদুল কাদের খান। ছবি: প্রথম আলো

অবৈধভাবে অস্ত্র রাখার দায়ে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব) আবদুল কাদের খানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন গাইবান্ধা স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালত। এ ছাড়া অবৈধভাবে গোলাবারুদ রাখার দায়ে একই আদালত কাদের খানের আরও ১৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই আদালতের বিচারক দীলিপ কুমার ভৌমিক এই রায় দেন। এ সময় আবদুল কাদের খান আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি শফিকুল ইসলাম জানান, আদালতে দুটি অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ বিচারক এই রায় দেন। কাদের খান একই আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলার প্রধান আসামি।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর সাহাবাজ মাষ্টারপাড়া গ্রামের নিজ বাড়িতে কয়েকজন দুর্বৃত্তের হাতে গুলিবিদ্ধ হন গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় তৎকালীন সাংসদ মনজুরুল ইসলাম লিটন। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ১ জানুয়ারি মনজুরুল ইসলাম লিটনের বড় বোন ফাহমিদা বুলবুল কাকলী বাদী হয়ে ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যা মামলার তদন্তে সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব) আবদুল কাদের খানকে মূল হোতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

সাংসদ মনজুরুল ইসলাম হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া শহরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কাদের খানকে। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধার আদালতে তাঁকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। ওই দিন রাতেই কাদের খানকে সঙ্গে নিয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপরহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি খানপাড়ায় কাদের খানের নিজের বাড়ি থেকে একটি পিস্তল ও ছয় রাউন্ড গুলিসহ একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় ২৩ ফেব্রুয়ারি সুন্দরগঞ্জ থানার তৎকালীন পরিদর্শক আবু হায়দার মো. আশরাফুজ্জামান বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। অবৈধভাবে অস্ত্র, গোলাবারুদ, ম্যাগাজিন রাখার দায়ে অস্ত্র আইনে এই মামলা দায়ের করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এই মামলায় ১৮ জন সাক্ষী সাক্ষ্যপ্রমাণ দেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় বিচারক এই রায় দেন।