ছাত্রদলের বিক্ষোভকে পোলাপানের 'মান-অভিমান' বললেন মির্জা আব্বাস

মির্জা আব্বাস
মির্জা আব্বাস

বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল কর্মীদের তালা লাগানোর বিষয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, এটি কিছু না। ওরা ‘মান-অভিমান’ করেছে, এটা ঠিক হয়ে যাবে। তিনি বলেছেন, বিষয়টি সাংবাদিকেরা যেভাবে সিরিয়াসলি নিয়েছে বা উপস্থাপন করেছে, আসলে বিষয়টি সে রকম সিরিয়াস না। এটি পোলাপানের কাজ-কর্ম, মান-অভিমানের কাজ।

নতুন কমিটিতে নেতা হওয়ার যোগ্যতা হিসেবে নির্ধারিত বয়সসীমা বাতিল করার দাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতারা মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলটির ভেঙে দেওয়া কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা ও কর্মী বিক্ষোভ করেন।

পরে বিকেলে ওই কার্যালয়ে ঢুকে কমিটি ভাঙার সিদ্ধান্তের সমর্থক ছাত্রদলের এক নেতাকে বেধড়ক মারপিট করার পাশাপাশি বিএনপি কার্যালয়ের কর্মীদের বের করে দেয় বিক্ষুব্ধরা। এরপর ঘণ্টাখানেক পর ওই কার্যালয়ে যান মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা। তাঁরা ভবনের তৃতীয় তলায় স্যালাইন লাগিয়ে রাখা বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে দেখতে যান এবং চিকিৎসকের কাছে তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। রিজভী সোমবার (১০ জুন) সকালে কয়েকবার বমি করেন বলে জানা গেছে।

কার্যালয় থেকে বেরিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, কয়েক দিন আগে ঈদ গেছে। মান-অভিমান হয়েছে। এটা ঠিক হয়ে যাবে। কারও কিছু করতে হবে না। কোনো সালিস, আলোচনা কিছুই করতে হবে না। ওরা রাগ করেছে, সব ঠিক হয়ে যাবে।

এর কিছু পরে বিএনপির কার্যালয়ে প্রবেশ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি কোনো পরিস্থিতি না যদি আপনারা ফলাও করে প্রচার না করেন। কেউ ব্যথা পেলে চিৎকার দেয়, এটাই স্বাভাবিক। আমাদের দীর্ঘদিন দলের কতগুলো পদ্ধতিগত কারণে অথবা নিয়মিত কাউন্সিল না হওয়ার কারণে যোগ্য ছেলেরা তাদের আরাধ্য লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। সেই বিষয়টি আমাদের বিবেচনা করতে হবে, এরা দলের জন্য পরিশ্রম করে, এরা বাইরের নয়, এরা দলের মঙ্গল চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘দলের মঙ্গল এবং ওদেরও যতটুকু প্রাপ্যটা আছে তা সমাধান করার পথ আমাদের খুঁজতে হবে। এটা অনেক বড় দল, অনেক কর্মী, অনেক নেতা। আমরা বিরোধী দলে আছি, আমাদের সীমাবদ্ধতাও আছে।’

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এই সীমাবদ্ধতার মূল কারণটা হলো, ‘আমাদের নিয়মিত কাউন্সিল হয়নি। মামলা-হামলা-নির্যাতনের কারণে নিয়মিত এই সাংগঠনিক কাজগুলো হয়নি। এই নিয়মিত সাংগঠনিক কাজগুলো হলে ওরাও ছাত্রদল করার জন্য এত আগ্রহী হতো না। ওরাও বোঝে এটা।’

সমাধান কী দেখছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সমস্যা যেমন আছে, সমাধানও আছে। আলোচনার মাধ্যমে এটার সমাধান হবে।

রুহুল কবির রিজভী হাসপাতালে যাবেন কিনা, জানতে চাইলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এটি চিকিৎসকেরা ঠিক করবেন। কিন্তু কোনো পরিস্থিতি বা এই ঘটনার জন্য তাঁকে বাইরে যেতে হবে, এটি যুক্তিসংগত প্রশ্ন না।

মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় কথা বলে যাওয়ার পরও বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ছিল। কার্যালয়ের প্রধান ফটকেও তালা লাগানো ছিল।


আরও পড়ুন: