ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে মারধরের অভিযোগ

অভিযুক্ত তরুণকে ছেড়ে দিয়ে মীমাংসার জন্য ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী (১৪) ও তার স্বজনদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গত রোববার মাদারীপুরের কালকিনি থানার খাসেরহাট তদন্তকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ওই কিশোরীর স্বজনদের। তবে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পরে জেলার পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়।

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে রোববার রাতে ষষ্ঠ শ্রেণির ওই স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে রাজীব খান (১৮) নামের এক তরুণের বিরুদ্ধে।

ওই ছাত্রীর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মুঠোফোনে ওই স্কুলছাত্রীর সঙ্গে রাজীবের সম্পর্ক। সেই সূত্রে রোববার গভীর রাতে পাশের পাটখেতে নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন রাজীব। এ সময় স্থানীয় লোকজন রাজীবকে আটক করে পুলিশকে খবর দেন। খাসেরহাট তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) বেল্লাল হোসেনসহ পাঁচজন পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত রাজীব, ঘটনার শিকার কিশোরী ও তার চার স্বজনকে তদন্তকেন্দ্রে নিয়ে যান। পরে রাজীবকে ছেড়ে দিয়ে কিশোরী ও তাঁর স্বজনদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

গত সোমবার রাতে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ওই স্কুলছাত্রী প্রথম আলোকে বলে, ‘ফাঁড়ির দারোগা স্যার (বেল্লাল হোসেন) আমারে চড় দিছে। বারে বারে কইছে আমি নাকি নাটক করতাছি, অভিনয় করতাছি। আমার আত্মীয়স্বজনরেও মারছে ওই স্যারে।’

হাসপাতালে মেয়েটির এক ফুফাও ছিলেন। পুলিশের মারধরে তিনি পায়ে আঘাত পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, তিনি ও কিশোরীর তিন চাচাতো ভাই গিয়েছিলেন খাসেরহাট তদন্তকেন্দ্রে। সেখানে মেয়েসহ তাঁদের সবাইকে মারধর করে পুলিশ। সোমবার সকালে পরিবারটি কালকিনি থানায় গেলেও পুলিশ তখন মামলা নেয়নি।

মাদারীপুরের এসপি সুব্রত কুমার হালদার বলেন, সোমবার রাতে তাঁকে ফোন দিয়ে ধর্ষণের বিষয়ে জানান মেয়েটির চাচা। তখনই কালকিনি থানার ওসিকে ফোন করে মামলা কেন নেওয়া হয়নি সে বিষয়ে জানতে চান তিনি। এরপর ওসি হাসপাতালে এসে মেয়েটিকে নিয়ে এসপির কার্যালয়ে যান। সেখানে তিনি নিজে মেয়েটির কাছ থেকে সবকিছু শোনেন। এরপর মামলা করার নির্দেশনা দেন।

মারধরের অভিযোগ প্রসঙ্গে এসপি বলেন, মেয়েটি সোমবার রাতে এ বিষয়ে কিছু বলেনি। যদি এ রকম কিছু হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই বেল্লাল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘এ ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানানো। ওই মেয়ে আমাদের কাছে স্টেটমেন্ট দিয়ে বলেছে, ধর্ষণের কোনো ঘটনা নাই।’

মাদারীপুর হাসপাতাল সূত্র জানায়, সোমবার রাতে ভর্তির পর ওই রাতেই হাসপাতাল ছাড়ে মেয়েটি।