ধর্ষণচেষ্টায় অভিযুক্ত পলাতক শিক্ষকের বিচার দাবি

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ করেন। পলাতক প্রধান শিক্ষককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।

গত সোমবার বিকেলে ওই বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রী (১২) বাদী হয়ে বারহাট্টা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি করে। মামলার পর থেকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক পলাতক।

স্থানীয় বাসিন্দা, মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বারহাট্টা উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ শ্রেণির ওই মেয়েটিকে বিদ্যালয়ের শৌচাগারে জড়িয়ে ধরেন। মেয়েটির পরনের ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা চালান তিনি। এ সময় ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে মেয়েটি। শিক্ষক তার চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে সুস্থ করে তোলেন। ঘটনাটি কাউকে না জানাতে মেয়েটিকে ভয়ভীতি দেখান তিনি।

মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীকে বিষয়টি জানায়। স্ত্রীর কাছ থেকে শুনে ওই দিন বিকেলে বড় ভাই বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফরিদা ইয়াসমিন ও উপজেলা পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মাইনুল হকের কাছে এ ঘটনার বিচার চান। তাদের নির্দেশে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন মেয়েটির ভাই। এ ঘটনার প্রায় চার মাস পর গত সোমবার বিকেলে মেয়েটি নিজে বাদী হয়ে বারহাট্টা থানায় ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করে। মামলার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত শিক্ষকের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

প্রধান শিক্ষককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে স্থানীয় লোকজন বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ লোকজন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ করেন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বারহাট্টা সার্কেল) মো. শফিউল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ এসে ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

অভিযোগকারী ওই মেয়েটি সাংবাদিকদের বলে, ‘হেড স্যার এর আগে গত জানুয়ারির শেষ দিকে আমার এক বান্ধবীকে ওই শৌচাগারের ভেতরে নিয়ে এ রকম করেছিলেন। ওই সময় বিষয়টি আমি দেখে ফেলায় তিনি আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়েছিলেন। এরপর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আমি শৌচাগারে যেতে চাইলে তিনি কৌশলে সেখানে গিয়ে আমার ওড়না দিয়ে মুখ বেঁধে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে আমার জ্ঞান ফিরলে তিনি বলেন, বিষয়টি কাউকে জানালে তোকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেব এবং মেরে ফেলব।’

বারহাট্টার ইউএনও ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানার ওসিকে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’