সেতুর সৌন্দর্য রক্ষায় তরুণদের উদ্যোগ

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ফুলের চারা রোপণ করেন তরুণেরা। গতকাল কুলাউড়া উপজেলার কুলাউড়া-ভূকশিমইল সড়কে।  প্রথম আলো
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে ফুলের চারা রোপণ করেন তরুণেরা। গতকাল কুলাউড়া উপজেলার কুলাউড়া-ভূকশিমইল সড়কে। প্রথম আলো

হাওরের পাশ ঘেঁষে গেছে পাকা সড়ক। ওই সড়কের মধ্যে রয়েছে ছোট একটি সেতু। আগাম বৃষ্টিতে হাওর পানিতে ভরে গেলে সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে হাওরের দৃশ্য দেখতে ভিড় জমান নানা এলাকার লোকজন। তাঁদের সুবিধার জন্য সেতুটির সৌন্দর্য রক্ষায় নামেন স্থানীয় কিছু তরুণ। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে তাঁরা সেতুটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে এটির আশপাশে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছের কিছু চারা রোপণ করেন।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় সেতুটির অবস্থান। হাকালুকি হাওরের পাশ দিয়ে যাওয়া কুলাউড়া-ভূকশিমইল সড়কের গোগালী ছড়া নদীর ওপর পড়েছে সেতুটি। এলাকার নামানুসারে এটি পালের মোড়া সেতু নামে পরিচিত।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পালের মোড়া সেতুটি বেশ পুরোনো। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কুলাউড়া-ভূকশিমইল সড়কে মেরামতের কাজ করে। এ সময় সেতুতে রং করানো হয়। গোগালী ছড়া নদীটি হাওরের সঙ্গে যুক্ত। বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলের পানি ওই নদী দিয়ে হাওরে গিয়ে নিষ্কাশিত হয়। এ সময়ে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন সেতু এলাকায় বেড়াতে যান। এ কারণে স্থানীয় কিছু তরুণ সেতুটির সৌন্দর্য রক্ষার উদ্যোগ নেন। তাঁরা ‘কুলাউড়া-সমস্যা ও সম্ভাবনা’ নামের ফেসবুকের একটি দলের সঙ্গে যুক্ত। ফেসবুকের মাধ্যমেই তাঁরা এ বিষয়ে প্রথম প্রচারণা চালান। গতকাল সকাল ৯টার দিকে বৃষ্টিতে ছাতা মাথায় নিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন তরুণ পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেন। প্রথমে তাঁরা সেতুসহ এর আশপাশে জমে থাকা আবর্জনা অপসারণ করেন। এরপর সেতুর দুই পাশে গোলাপ, জবা, হাসনাহেনা, সূর্যমুখীসহ নানা প্রজাতির ১০০ ফুলের চারা রোপণ করেন। এ কর্মসূচিতে স্থানীয় বাসিন্দা কলেজশিক্ষার্থী সৈয়দ মাহফুজ হামিদ, মাহবুব হাসান জসিম, সেলিম আহমদ, অবিনাশ দাস, পাপলু আহমদ, জয়দীপ দাস প্রমুখ ছিলেন।

মাহফুজ হামিদ বলেন, মাহফুজ বলেন, অনেক সময় হাওরে অতিরিক্ত পানি হলে ঢেউয়ে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সড়কের পাশে বেশি করে গাছ লাগালে এটা ঠেকানো যেত। পাশাপাশি পর্যটকেরা ছায়া পেতেন। রাতে সেতু অন্ধকার থাকে। সেখানে সড়কবাতি স্থাপন করা গেলে এটির সৌন্দর্য আরও বাড়ত।

ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বলেন, সেতুর পাশ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। এ কাজ সম্পন্ন হলে সেতুতে সড়কবাতি স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদি উর রহিম বলেন, তরুণদের এ উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। সড়কে গাছ রোপণের ব্যাপারে তিনি বন বিভাগের সঙ্গে কথা বলবেন। সড়কবাতির বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।